আসানসোল হাসপাতালের অব্যবস্থা দেখে ক্ষোভ অগ্নিমিত্রার

অশোক সেনগুপ্ত, আমাদের ভারত, ৬ সেপ্টেম্বর: আসানসোল হাসপাতালের অব্যবস্থা দেখে বুধবার ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিজেপি-র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। কর্তৃপক্ষকে তিনি এই অব্যবস্থা দূর করে পরিচ্ছন্ন ও উন্নত পরিকাঠামো আনতে বলেন।

অগ্নিমিত্রা সাংবাদিকদের বলেন, “আমি এসেছিলাম আমার দলের এক কার্যকর্তা কন্যাসন্তান প্রসব করেছেন, তাকে দেখতে। কিন্তু ওয়ার্ডের কী অবস্থা! এক শয্যায় একাধিক সদ্যোজাত শিশুর মা। বেড়াল ঘুরে বেড়াচ্ছে। অপরিচ্ছন্ন বাথরুম। সেখানে দুর্গন্ধ। মায়েরা ওই বাথরুমে গিয়েই তো দুর্বল শরীর নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। যত্রতত্র কাগজ, কাপড় পড়ে আছে।

এ ছাড়া প্যাথলজি বিভাগে এসে লোকে ফিরে যাচ্ছে। আমি জানতে চাইলাম এরকম কেন হবে? ওরা বলছেন পরিকাঠামো নেই। তাই কেবল হাসপাতালের রোগীদেরই পরীক্ষা করা হচ্ছে এই বিভাগে। আমি বললাম, তা তো হতে পারে না। স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য গরিব মানুষ কোথায় যাবে? কর্তৃপক্ষ লোকাভাবের কথা বলে জানাচ্ছেন কোনও নিয়োগ হচ্ছে না। প্রতিটি সরকারি বিভাগে এই অবস্থা। অথচ মমতা সরকার কবেই দাবি করেছে ৯৯ শতাংশ কাজ হয়ে গেছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অগ্নিমিত্রা বলেন, কেন এই অবস্থা। এক আধিকারিক হাসপাতালে চিকিৎসকের এবং বিভিন্ন শ্রেণির স্বাস্থ্যকর্মীর দোহাই দেন। অগ্নিমিত্রা বলেন, ওসব বললে তো চলবে না। কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে মেলা-খেলা-অনুদানে। আর হাসপাতালের এই দুর্দশা? গরিব মানুষের স্বাচ্ছন্দ্য একটুকুও দেখবেন না?

অবিলম্বে পরিস্থিতি যতটা সম্ভব উন্নত করতে বলেন তিনি। এই সঙ্গে বলেন, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অফিসারকে (সিএমওএইচ) আগে বলেছিলাম, আজ আবার বলছি। প্রতি সাত দিন বাদে আমি এখানে আসব। তদারকি করবো। কেন এই জায়গা বেসরকারি হাসপাতালের মত পরিচ্ছন্ন হবে না?

অগ্নিমিত্রা বলেন, দুর্নীতির অভিযোগও উঠছে।
ডাক্তারবাবুরা এমন ওষুধ দিচ্ছেন যা হাসপাতালে নেই। বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। কেন ডাক্তারবাবুরা এমন ওষুধ দেবেন? ওনারা তো জানেন এই হাসপাতালে কী ধরণের ওষুধ থাকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘আয়ুষ’ প্রকল্প করেছেন। তাতে অত্যন্ত কম দামে ১০-১২ টাকার ওষুধ পাওয়া যায়। কেন সেই ওষুধ এখানে রাখা হচ্ছে না? আমি বিধানসভায় এই প্রশ্ন রাখব।

আমি এই অঞ্চলের বিধায়ক। আমি এই হাসপাতালের অভিভাবক। ওরা আমার নাম রোগীকল্যাণ সমিতিতে ঢোকায়নি। তাতে আমার কিচ্ছু এসে যায় না। এই দেখুন, হাসপাতালে গরু ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমি যথেষ্ঠ পশুপ্রেমী। কিন্তু হাসপাতালের ভিতর গরু, ছাগল, কুকুর, বেড়াল ঘুরে বেড়াতে দেওয়া হবে না। হাসপাতালে পূর্ণ মাত্রায় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। কোনও অনিয়ম হবে না। আর রোগীদের অসুবিধা হলে আমি ছেড়ে কথা বলব না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *