আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ২২ অক্টোবর: ভুল চিকিৎসায় এক রোগীর মৃত্যুতে উত্তেজনা ছড়াল রামপুরহাটে। প্রতিবাদে পরিবারের লোকজন মৃতদেহ নার্সিংহোমের সামনে নামিয়ে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। শেষ পর্যন্ত পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বভাবিক হয়।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম প্রসেনজিৎ দাস (২৬)। বাড়ি রামপুরহাট পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কালিসাড়া পাড়ায়। মৃত যুবকের বাবা জটাই দাস জানান, চলতি বছরের জুন মাসে ছেলের গলব্লাডারে স্টোন ধরা পড়ে। চিকিৎসার জন্য রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক ছিলেন অভিষেক ঘোষ। তিনিই হাসপাতাল থেকে তাঁর পছন্দের নার্সিংহোমে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। সেই মতো সিউড়ির তৃণমূল বিধায়ক অশোক চট্টোপাধ্যায়ের রামপুরহাটের নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। ৪ জুন তার অস্ত্রপচার করা হয়। ভুল অস্ত্রপচারের ফলে তার শরীরে পচন শুরু হয়। পেট ফুলে যায়। দিন পনেরো পর ফের একই নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। দ্বিতীয়বার অস্ত্রপচার করেও ক্ষত ঠিক না হওয়ায় চিকিৎসক এবং নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ নিজেদের খরচে ছেলেকে সল্টলেকের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করে। সেখানে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয় পিত্তনালী ফুটো হয়ে গিয়েছে। কলকাতার নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ছেড়ে দেওয়ার পর ফের তাকে রামপুরহাটের নার্সিংহোম ভর্তি করা হয়। ১৬ জুলাই নিজের খরচে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ছেলেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। বুধবার সন্ধ্যায় সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার জন্যই মৃত্যু হয়েছে ছেলের। বৃহস্পতিবার সকালে পরিবারের লোকজন রামপুরহাটে তৃণমূল বিধায়কের নার্সিংহোমের সামনে মৃতদেহ নামিয়ে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। ঘণ্টা তিনেক ধরে বিক্ষোভ চলার পর পুলিশি মধ্যস্থতায় মৃতদেহ তুলে নিয়ে গিয়ে সৎকার করে পরিবারের লোকজন।
জটাইবাবু বলেন, “চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার জন্যই ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আমরা দরিদ্র মানুষ। তাই হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। কিন্তু ওই চিকিৎসক আমাকে নার্সিংহোমে ভর্তি করতে বাধ্য করে। চিকিৎসকদের অর্থের লোভে আমি ছেলেকেই হারালাম”। যদিও এনিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি অশোক চট্টোপাধ্যায়।