ফের দালাল চক্র রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ৫ জুন: ফের দালাল চক্র সক্রিয় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। অ্যাম্বুলেন্স চালক ও মালিকদের যোগসাজশে হাসপাতাল চত্বরে রাজ করছে দালাল চক্র। মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সর্বস্ব খোয়াচ্ছেন রোগীর পরিজনরা। নির্বিকার প্রশাসন।

রামপুরহাট হাসপাতালে দালালরাজ বহু পুরনো। অ্যাম্বুলেন্স চালকরা রোগীদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার নামে মোটা টাকা কমিশনের লোভে বেসরকারি নার্সিং হোমে ঢুকিয়ে দেয়। পরে অসহায় পরিবারের আত্মীয়রা ঘটিবাটি বিক্রি করে নার্সিং হোমের টাকা পরিশোধ করে। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রামপুরহাটের এক অ্যাম্বুলেস চালকের খপ্পরে পরে চিকিৎসা করাতে গিয়ে বাবাকে হারান এক প্রসূতি। নার্সিং হোমের বিলের চাপে দিশেহারা হয়ে আত্মহত্যা করেন প্রসূতির বাবা। এই ঘটনায় সে সময় নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। একাধিক বৈঠক হয়। সে সময় প্রত্যেক অ্যাম্বুলেন্সে জি পি আর এস লাগানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। কিন্তু তা এখন অতীত। সে সময় অপরাধীর কোনও শাস্তি হয়নি। ফলে প্রশাসনের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে দালাল চক্র মাথা চাড়া দিচ্ছে হাসপাতালে।

শুক্রবার সকালে রামপুরহাট হাসপাতালে আনন্দ মণ্ডল নামে এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়। তাঁর বাড়ি মাড়গ্রাম থানার বাতিনা গ্রামে। দুপুরের দিকে শ্যামল দাস নামে এক যুবক মৃতদেহ অ্যাম্বুলেন্সে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার নামে পরিবারের কাছ থেকে টাকা অগ্রিম নেয়। ঠিক ছিল বড় অ্যাম্বুলেন্সে মৃতদেহ নিয়ে যাবে। কিন্তু পরে ছোট্ট একটি মারুতি ভ্যান পাঠিয়ে সে গা ঢাকা দেয়। অ্যাম্বুলেন্স চালক মাধব মণ্ডল বলেন, “শ্যামল আমাকে আসতে বলেছিল। তাঁর কথাতেই আমি এসেছি। কিন্তু কি কথা হয়েছে আমার জানা নেই”।

অ্যাম্বুলেন্স চালকদের সংগঠনের সভাপতি সন্দীপ ঘোষ বলেন, “আমরা ব্যবসা করি। দালালদের ধরতে গেলে আমরা মার খাব। ব্যবসা করতে এসে আমরা কেন সমস্যা কিনব। তবে যে একাজ করেছে সে ঠিক করেনি।” রামপুরহাট হাসপাতালের এম এস ভি পি সুজয় মিস্ত্রি বলেন, “দালাল চক্র নিয়ে কোনও অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *