আমাদের ভারত, ২১ আগস্ট: এর আগে খড়গপুরের সরকারি স্কুলকে দুয়ারে রেশনের গুদাম ঘর বানানোর নোটিশ ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছিল। এবার অভিযোগ স্কুল ব্যবহার হচ্ছে মা ক্যান্টিনের রান্না ঘর হিসেবে। রান্নার ঝাঁঝে অতিষ্ট ছাত্র ছাত্রীরা। স্কুলে ক্লাস করানো দায় হয়ে যায়। বড় বড় হাঁড়ি কড়াই কন্টেনারের আওয়াজ গ্যাস সিলিন্ডার ওঠানো-নামানোর আওয়াজ সর্বক্ষণ। বেশিরভাগ সময়ই পানীয় জল থাকে না। শৌচাগার ব্যবহার করার মত জল থাকে না। এই অবস্থার মধ্যেই ছাত্রীদের স্কুল চালাতে হচ্ছে। টালার আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবনের অবস্থা এখন এমনটাই। কারণ সেখানে বেআইনিভাবে রাজ্য সরকারের মা ক্যান্টিন প্রকল্পের খাবার তৈরি হচ্ছে দিনের পর দিন বলে অভিযোগ।
বার বার বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ জানানো হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। জানা গেছে, আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রায় ৬৩ বছরের পুরনো। ভোরে এই স্কুলের প্রাক-প্রাথমিক ও মেয়েদের ক্লাস হয়। এই শাখা দুটির নাম অরবিন্দ শিশু নিকেতন ও আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়। বেলায় উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি চলে প্রাক-প্রাথমিক অরবিন্দ বিদ্যানিকেতন। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অধীনে স্কুলের সরকারি নিয়ম মেনে প্রাক-প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের মিড-ডে-মিল দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, বছর কয়েক আগে স্থানীয় পৌর প্রশাসক সূত্রে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্কুলে মিড ডে মিল রান্নার দায়িত্ব পায়। এই খাবারটা এই চত্বরের বেশ কয়েকটি স্কুলে যেতে শুরু করে। অভিযোগ, ওই সংস্থা পরে স্থানীয় এক নেতার আশীর্বাদ ধন্য হয়ে স্কুল ভবনটি ব্যবহার করতে শুরু করে ও মা ক্যান্টিনের খাবার তৈরি করতে বরাত পায়।
বর্তমানে এই স্কুল থেকেই শহরের তিনটি বড় এলাকা মিলিয়ে অন্তত ১৫টি ওয়ার্ডে মা ক্যান্টিনে খাবার দেয়। স্কুলের গেটের সামনে দিনভর দাঁড়িয়ে থাকে ছোট ছোট লড়ি। সেগুলো ব্যবহার করা হয় আনাজ ডিম চাল ডাল গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে আসার জন্য। কোনটির ব্যবহার হয় খাবার পাঠানোর জন্য। অভিযোগ ছেলে মেয়েদের রাস্তা পর্যন্ত থাকে না যাতায়াতের জন্য রাত ৩ টা থেকে বিকেল পর্যন্ত রান্না চলে স্কুলে। জল শেষ হয়ে যায়। শৌচাগার ব্যবহার করতে পারে না ছাত্রছাত্রীরা জলের অভাবে। পানীয় জল পায় না ছাত্ররা। অথচ স্কুলের জন্য বিশেষ জলের লাইন নেওয়া হয়েছে।
এমনকি মা ক্যান্টিনের ব্যবসা চালাতে স্কুলের বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু তার বদলে স্কুলকে খরচ দেওয়া হয় না। ক্যান্টিনে বেঁচে যাওয়া খাবার ছাত্রদের খাওয়ানো হয়। বারবার বলেও মিড-ডে-মিল আলাদা করে তৈরি হয়নি। মিড ডে মিলের যে বাসন তাও দখল করে নেওয়া হয়েছে।

