আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ১৩ ডিসেম্বর: এসটি তালিকাভুক্ত করার দাবিতে গত সোমবার থেকে ঝাড়গ্রামে জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে আসছিল কুড়মি সমাজ। শনিবার রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস পেয়ে আন্দোলন তুলে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতেও অস্বস্তি কাটল না রাজ্য সরকারের। কুড়মি সমাজের পর এবার দাবি আদায়ে সক্রিয় হয়েছে আদিবাসীরা। কুড়মি সমাজের আন্দোলন চলাকালীন গত শুক্রবার আদিবাসীদের সমাজ সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের পক্ষ থেকে রবিন টুডুর নেতৃত্বে জেলাশাসককে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
যদিও আদিবাসীদের এই সমাজ সংগঠনটি এখন দু’ভাগে বিভক্ত। রবিন টুডুর বিরোধী অংশটি সাঁওতালদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের দাবিতে রাজ্যের উপর চাপ বাড়ানোর জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। কারণ রবিন টুডুর বিরুদ্ধে তৃণমূল দল করার অভিযোগ রয়েছে রাজনীতি মুক্ত আদিবাসী সংগঠনের একাংশের। রবিন টুডু তৃণমূল কংগ্রেসের এসটি সেলের রাজ্য সভাপতি হিসেবে কাজ করছেন, এজন্য রবিনকে এড়িয়ে চলে অন্য গোষ্ঠীটি। কিন্তু শাসক রাজনৈতিক দলের পদাধিকারী হলেও নিজেকে তিনি সামাজিক সংগঠনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত প্রমাণ করার জন্যই শুক্রবার তড়িঘড়ি তার গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে জেলাশাসককে স্মারকলিপি দেন বলে মনে করা হচ্ছে। ওই স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়েছে আদিবাসীদের সারি ধরম ধর্মকে কোড সহ স্বীকৃতি দিতে হবে, সমস্ত সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ডে সাঁওতালি ভাষার অলচিকি লিপিকে জায়গা দিতে হবে, প্রতিটি জেলায় আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তর খুলতে হবে এবং প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত অলচিকি লিপিতে পঠন-পাঠনের সবরকম ব্যবস্থা করতে হবে। দু’বছর আগে মার্চ মাসে ঝাড়গ্রামের প্রাক্তন সাংসদ উমা সরেন কুড়মিদের এসটি তালিকাভুক্ত করার পক্ষে বক্তব্য রাখার পর এই ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল ক্ষেপে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে উমা সরেনের কুশপুত্তলিকা পুড়িয়ে কুড়মিদের এসটি করার দাবির বিরোধিতা করেছিল। শুক্রবার সেই কুড়মি সমাজের বিক্ষোভ আন্দোলনের মাঝে আদিবাসীদের ওই সমাজ সংগঠনের স্মারকলিপি দেওয়া নিয়ে সামাজিক কারণেরও যোগ দেখছেন অনেকেই।
রবিন টুডু অবশ্য জানিয়েছেন, একটি রাজনৈতিক দলের পদে থাকলেও সমাজ সংগঠনের ক্ষেত্রে রাজনীতির কোনও সংযোগ নেই। আমরা আদিবাসীদের দাবি পূরণের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কাছে দরবার করছি।