সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা, ২৭ ফেব্রুয়ারি: যানজট কমাতে জীর্ণ পুরনো উড়ালপুল ভেঙ্গে শহরে নতুন উড়ালপুল পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই করেছে কেএমডিএ। সম্প্রতি চিংড়িঘাটা উড়ালপুল ভেঙ্গে ইএম বাইপাস থেকে নিউটাউন পর্যন্ত নতুন ফ্লাইওভার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতর। শীঘ্রই শুরু হবে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরির কাজ।
স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট বলছে, আয়ু কমছে চিংড়িঘাটা ফ্লাইওভারের। দফায় দফায় পরীক্ষা চালানোর পর নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে ভারী যান চলাচল। এই সেতুকে তাই আর রাখতে চায় না রাজ্য সরকার। ফলে ধাপে ধাপে ভেঙ্গে ফেলা হবে উড়ালপুল। যদিও বর্তমানে এই সেতুর উপর দিয়ে ভারী গাড়ির চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। যার জেরে ব্যাপক যানজট তৈরি হচ্ছে চিংড়িঘাটা মোড় ও বেলেঘাটা বিল্ডিং মোড়ে।
তাই এবার নয়া উড়ালপথ বানানোর সিদ্ধান্ত নিল কেএমডিএ। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ইএম বাইপাসের মেট্রোপলিটন মোড় থেকে শুরু হবে নতুন উড়ালপুল। শেষ হবে নিউটাউন বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে। ফ্লাইওভারে দুটি র্যাম্প রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। যা সেক্টর ফাইভকে সংযুক্ত করবে। প্রায় ৭ কিলোমিটার লম্বা উড়ালপুল হবে দুই লেন বিশিষ্ট। প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মেট্রোপলিটন থেকে চিংড়িঘাটা, নিকো পার্ক হয়ে উড়ালপুল নিয়ে যাওয়া হবে নিউটাউন পর্যন্ত। যদিও এই রাস্তায় এখন নিউ গড়িয়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত মেট্রো রেলের কাজ চলছে। ফলে রাস্তার কোন অংশ দিয়ে, কতটা উচ্চতা দিয়ে উড়ালপুল নিয়ে যাওয়া হবে তা নিয়ে বেশ কিছু সংশয় রয়েছে।
তবে কেএমডিএ আধিকারিকদের দাবি, খালের দুধারে যে জায়গা রয়েছে তাতে পিলার তৈরি করে কাজ করতে অসুবিধা হবে না। নিকো পার্কের পর সেতু ঘুরিয়ে দেওয়া হবে মৎস্য ভবনের দিকে। আর এখানেই তৈরি হয়েছে সমস্যা। কারণ রাস্তার মাঝে গড়িয়া থেকে বিমানবন্দরগামী মেট্রো প্রকল্পের পিলার বসানো হয়েছে। এই পিলার হয় সরাতে হবে। নয়তো যে উচ্চতা দিয়ে সেতু নিয়ে যেতে হবে তা বেশ খরচ সাপেক্ষ হবে।
ইতিমধ্যেই এই জায়গায় কাজ কি ভাবে করা যাবে, তা নিয়ে খড়গপুর আইআইটি থেকে পরামর্শ চেয়েছে কেএমডিএ। তবে নিউটাউন দিক থেকে ইএম বাইপাস যেতে কোনও সমস্যা হবে না বলেই মনে করছেন ইঞ্জিনিয়াররা। এই উড়ালপুলে থাকছে দুটি র্যাম্প। একটি নিকো পার্ক পেরিয়ে উইপ্রো ফ্লাইওভারের কাছে নামবে। যাতে করুণাময়ী বা সেক্টর ফাইভ যাওয়ার জন্য গাড়ি নামতে পারে। আর একটি র্যাম্প রিং রোড থেকে জুড়ে দেওয়া হবে। যাতে সেক্টর ফাইভ থেকে বাইপাসগামী গাড়ি উঠতে পারে। এই পথে জমি জট নেই বলেই দাবি রাজ্যের।
রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “চিংড়িঘাটা উড়ালপুল আগামী দিনে ভাঙ্গতে হবে। একইসাথে বাইপাস ও নিউটাউনের যানবাহনের জন্য যাতে যানজট বাধা না হয়ে দাঁড়ায় তাই প্রায় ৬.৫ কিলোমিটার এই উড়ালপুল করা হবে। আনুমানিক খরচ পড়বে ৩১৫ কোটি টাকা। সেতুর জন্য বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।”