আমাদের ভারত, ১২ ডিসেম্বর: আগামী বছরের এপ্রিল মাস থেকে শুরু হতে চলেছে ভারতে জাতীয় জনগণনা ২০২৭। কেন্দ্রীয় সরকার শুক্রবার জানিয়েছে, এই জনগণনা সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে করা হবে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে জনগণনা করার জন্য তথ্য সংগ্রহ করতে ব্যবহৃত হবে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। এরজন্য কেন্দ্র মোট ১১,৭১৮.২৪ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে।
জনগণনার কাজ হবে দুই পর্যায়ে। প্রথমে ঘর গণনা, ২০২৬ সালের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরে, তারপর জনসংখ্যা গণনা চলবে ফেব্রুয়ারি ২০২৭ পর্যন্ত। লাদাখ, জম্মু-কাশ্মীর, উত্তরাখন্ড, হিমাচলের কিছু এলাকায় জনসংখ্যার গণনা হবে সেপ্টেম্বর ২০২৬- এ। কারণ সেই সময় বরফে ঢেকে থাকবে ওই এলাকা।
এবারে জনগণনার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল- জাতিভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ইলেকট্রনিক ফরমেটে এই তথ্য তোলা হবে বলে জানাগেছে।
কেন্দ্র জানিয়েছে, পুরো কাজটি সম্পন্ন করতে লাগবে ৩০ লক্ষ ফিল্ড ওয়ার্কার। যাদের বেশিরভাগই হবেন সরকারি স্কুল শিক্ষক। তাদের নিয়োগ করবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার। বিএলও’দের মতই এই কর্মীরা নিজেদের নিয়মিত চাকরির পাশাপাশি জনগণনার কাজ করবেন।
প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে তথ্য নথিভুক্ত করার পর সেগুলি বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন মন্ত্রকের কাছে মেশিন রিডেবল ফরমেটে পাঠানো হবে। যাতে দ্রুত নীতি নির্ধারণে ব্যবহার করা যায়।
২০১৭ সালের জনগণনায় একাধিক নতুন প্রযুক্তি ভিত্তিক পদক্ষেপ করা হচ্ছে। যেমন এবছর প্রথম ডিজিটাল জনগণনা হবে, ফলে এন্ড্রয়েড IOS চালিত মোবাইল ফোনে চলবে বিশেষ অ্যাপ।
সিএমএমএস পোর্টাল বা সেন্সাস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড মনিটারিং সিস্টেমে রিয়েল টাইমে পুরো প্রক্রিয়া নজরদারি করা হবে।
এইচ এল বি ক্রিয়েটর ওয়েব ম্যাপ অ্যাপ্লিকেশনে ঘর গণনার ব্লক তৈরি করতে নতুন ওয়েব ম্যাপ সিস্টেম ব্যবহার করা হবে।
স্বগণনার ব্যবস্থা করা হবে, যাতে সাধারণ মানুষ চাইলে নিজেরাই তথ্য আপলোড করতে পারেন।
ডেটা সুরক্ষার জন্য তথ্য সুরক্ষায় একাধিক নিরাপত্তা স্তর রাখা হয়েছে।
দেশব্যাপী প্রচার অভিযানে অংশগ্রহণ বাড়াতে বড়সড় প্রচার ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
সরকার জানিয়েছে, ডিজিটালাইজেশনের ফলে ভবিষ্যতে জনগণনার তথ্য সবচেয়ে কম সময় প্রকাশ করা সম্ভব হবে।
সরকারি হিসাবে জনগণনা প্রকল্পে তৈরি হবে ১.০১ কোটি ম্যান ডের কর্মসংস্থান। কর্মীদের ডিজিটাল ডাটা ম্যানেজমেন্ট মনিটরিং ও কোঅর্ডিনেশন শেখানো হবে। এতে ভবিষ্যতে তাদের পেশাগত দক্ষতা বাড়াবে।
২০২৭ সালের এই ডিজিটাল জনগণনা দেশের ১৬তম জনগণনা। স্বাধীনতার পর এটা অষ্টম বার। এদেশের প্রতিটি গ্রাম, শহর ও ওয়ার্ড স্তরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক তথ্যভাণ্ডার তৈরি করবে বলে কেন্দ্র জানিয়েছে। সরকারের মতে এই তথ্যভাণ্ডার ভবিষ্যতে সরকারি পরিষেবা, নীতি নির্মাণ ও পরিকল্পনা তৈরীর অন্যতম মূল ভিত্তি হয়ে উঠবে।

