পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ৬ মার্চ: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আস্ত পঞ্চায়েত দখল করে শাসকের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলল গেরুয়া শিবির। শহর লাগোয়া ডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপির এই জয় বাড়তি মনোবল জোগাবে, দাবি বিজেপির। যদিও বিজেপির যুক্তি উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল।
সোমবার বালুরঘাটের ডাঙ্গা পঞ্চায়েতে একেবারে বিরোধী শূন্য তলবি সভায় রিস্তারা সংসদের সদস্য চন্দনা পাহানকে প্রধান নির্বাচিত করা হয়। দোলের আগের দিন পঞ্চায়েত দখলের এমন আনন্দে আবীর খেলায় মাতেন বিজেপি কর্মীসমর্থকরা। মিষ্টিও বিলি করা হয় পঞ্চায়েত জয়ের খুশিতে।
এদিনের তলবিসভা ঘিরে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল প্রশাসনের তরফে। নিরাপত্তা বজায় রাখতে এলাকায় মোতায়েন ছিল বিরাট পুলিশ বাহিনী।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই শহর লাগোয়া ডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতে টালমাটাল অবস্থা চলছিল। শুরু থেকেই ওই পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েও শাসকদলের কূটনীতির কাছে হার মানতে হয়েছিল গেরুয়া শিবিরকে। তবে দীর্ঘদিন সেই পঞ্চায়েত ধরে রাখতে পারেনি তৃণমূল। বিজেপির প্রধানকে নিজেদের বশে করেও শেষ রক্ষা হয়নি।
হাই কোর্টের রায়ে দোল উৎসবের আগে যেন বেরঙিন হয়ে যায় শাসক দল। সংখ্যালঘু হয়েও প্রায় বছরভর পঞ্চায়েতে রাজ করলেও পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে শেষ হাসি হাসল বিজেপিই, যা শাসক দলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলার মতোই পরিস্থিতি তৈরি করে।
জানা যায়, ২০১৮র পঞ্চায়েত নির্বাচনে ২০ আসন বিশিষ্ট ডাঙ্গা পঞ্চায়েতের ১১টি আসন দখল করে বিজেপি। তৃণমূল ছয়টি এবং বামেদের দখলে যায় মাত্র ৩টি আসন। প্রথমে নিজেদের জেতা প্রার্থী মল্লিকা কর্মকারকে প্রধান এবং সুভাষ সরকারকে উপপ্রধান করে বোর্ড গড়ে বিজেপি। কিন্তু শাসকের কূটনীতির কাছে হার মানতে হয়েছিল বিজেপিকে। মহিলা প্রধানকে নিজেদের বশে করে বকলমে পঞ্চায়েতের সমস্ত কাজ পরিচালনা করছিল শাসক দল। বিপদ বুঝে একাধিকবার ওই প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেও বিফল হয়েছিল বিজেপি। জানুয়ারি মাসেও প্রশাসনের অসহযোগিতায় অনাস্থা ভেস্তে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ঘটনার প্রতিবাদে বিডিওর উপর আক্রমণ করে বসেন বিজেপি নেতা সুভাষ সরকার। ঘটনায় জেলেও থাকতে হয় তাকে। এর মাঝেই প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। আদালতের নির্দেশে ১৫ ফেব্রুয়ারি তলবি সভার দিন ধার্য হলেও তাঁর আগেই পদত্যাগ করতে বাধ্য হন ওই প্রধান। এদিন তলবি সভার মাধ্যমে ওই পঞ্চায়েতে এককভাবে ক্ষমতা দখল করে বিজেপি।
বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী জানিয়েছেন, সত্যের জয় হবেই। এখানেও তাই হয়েছে।
যদিও তৃণমূল নেতা সুভাষ চাকি বলেন, পঞ্চায়েত ভোটের আগে আইওয়াশ করবার চেষ্টা করছে বিজেপি, যা কোনও কাজে দেবে না।