আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ৫ ফেব্রুয়ারি: নতুন বছরের শুরুতেই আলিপুরদুয়ার জেলায় কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা শুন্য। পাশাপাশি গত ৭ জানুয়ারির পর থেকে ফেব্রুয়ারির ৫ তারিখ পর্যন্ত আলিপুরদুয়ার জেলায় কোনও কোভিড রোগীর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। গুরুত্বপূর্ণ দুটি তথ্য শুক্রবার তুলে ধরলেন কোভিডের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত উত্তরবঙ্গের ওএসডি সুশান্ত রায়। শুক্রবার আলিপুরদুয়ারে সাংবাদিকদের তিনি জানান, আলিপুরদুয়ারে কোভিডের জন্য ডেডিকেটেড তপসীখাতা কোভিড হাসপাতালে গত ৩০ দিন কোনও রোগী নেই। সেখানে স্বাস্থ্য দপ্তরের বিভিন্ন স্তরের কর্মীরা রয়েছেন। তাদের ধীরে ধীরে সেখান থেকে সরিয়ে অন্যান্য দায়িত্বে নিয়ে যাওয়া হবে। নিউ নর্মাল পরিস্থিতিতে তপসীখাতা আয়ুস হাসপাতালের কাজ দ্রুত শুরু করার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।সুশান্তবাবু এও বলেন, কোভিড পরিস্থিতি প্রায় নিয়ন্ত্রণে। জলপাইগুড়ি জেলাতেও কোভিড রোগী পাওয়া যায়নি গত কয়েকদিন। বালুরঘাট জেলাতে যদি ৪০০ জনের টেস্ট করা হয় সেক্ষেত্রে গত কয়েকদিনে দেখা গেছে মাত্র একজনের পজিটিভ আসছে।
শিলিগুড়িতে গতকাল মাত্র ১১ জন রোগীর অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল। সার্বিকভাবে পরিস্থিতি অনেক ভাল।
উল্লেখ্য, আলিপুরদুয়ার জেলার পাশের একদিকে যেমন ভূটান, অসমের মত প্রতিবেশী দেশ রয়েছে তেমনি জেলায় ফিরে এসেছে পরিয়ায়ী শ্রমিক। সব মিলিয়ে কোভিড পরিস্থিতিতে আলিপুরদুয়ার জেলায় ভাইরাস ছড়িয়ে যাবার যথেষ্টই সম্ভাবনা ছিল। তবে টানা গত ১২ মাস স্বাস্থ্য দফতর নির্দিষ্ট প্রোটোকল মেনে ব্লক থেকে জেলা নিবিড় যোগাযোগ তৈরি করে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। আলিপুরদুয়ারের চিকিৎসা ব্যবস্থার মডেল উচ্চ প্রশংসীত হয় বিভিন্ন মহলে।একদিকে কোভিড ছড়িয়ে পড়া যেমন আটকে যায়, তেমনি মৃত্যু হারের নিরিখেও উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির মধ্যে প্রায় নিচের দিকে ছিল আলিপুরদুয়ার। এদিকে, নতুন বছরের ৭ জানুয়ারির পর থেকে জেলায় কোভিড আক্রান্তর হদিশ না মেলায় স্বস্তি মিলেছে বিভিন্ন মহলে। যদিও আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের সুপার চিন্ময় বর্মন বলেন,“এটা ঠিকই কোভিডের প্রথম স্টেনের ধাক্কা আমরা সামলে দিয়েছি।খুবই ভাল খবর। তবে এখনও পুরপুরি নিশ্চিন্ত হবার সময় আসেনি। মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার, ভিড় এড়িয়ে চলার কাজগুলি সকলকে করতে হবে। পাশাপাশি যেহেতু টিকাকরণের কাজ শুরু হয়েছে, আগামী ৭ দিনের মধ্যে প্রথম ধাপের টিকাকরণ শেষ হবে। এটাও কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আত্মবিশ্বাসী করবে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মী, পুলিশ প্রশাসন সহ যারা এক্কেবারে সামনের সারিতে রয়েছে সকলকে।
উল্লেক্ষ্য, এদিন চোখের আলো কর্মসূচি জেলায় কেমন চলছে তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে আলিপুরদুয়ার আসেন সুশান্ত রায়। তিনি বলেন, ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত চোখের আলো প্রকল্পে প্রায় ১২ হাজার মানুষকে বিনামূল্যে চশমা দেওয়া হয়েছে। মোট রোগী ছিলেন ১৮ হাজার।যাদের ছানি অপারেশনের প্রয়োজন তাদের জেলার ৪টি হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে অপারেশন করা হবে। চোখের আলো একটি ইউনিক প্রকল্প।এমন ভাবনা অতীতে আসেনি। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত আলিপুরদুয়ারে আর তিনজন আই সার্জেন পাঠানোর। সেক্ষেত্রে গড়ে প্রতিদিন অনেক বেশি মানুষের ছানি অপারেশন করা যাবে।