আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ৩ সেপ্টেম্বর:
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের নর্থ রায়ডাক রেঞ্জে রায়ডাক নদী দিয়ে ভেসে যাওয়ার সময় বনকর্মীরা উদ্ধার করে একটি হস্তি শাবককে। অনাথ হয়েই পৌঁছে গিয়েছিল জলদাপাড়ার হলং পিলখানায়। মাত্র ৭ মাসের হস্তি শাবক। স্বাভাবিকভাবেই বক্সা ও জলদাপাড়া দুই বনবিভাগের কর্তারাই চিন্তিত ছিলেন ছোট্ট শাবকটিকে নিয়ে। তবে প্রাথমিকভাবে বনদপ্তরের উদ্বেগ অনেকটাই কমিয়ে দিল জলদাপাড়ায় পরিচিত কুনকি হাতি চম্পাকলি। মা হিসেবে বুধবারই ৭ মাসের শাবকটিকে কাছে টেনে নিয়েছে চম্পাকলি। নিজের দুধও খাইয়েছে শাবকটিকে।
উল্লেখ্য, জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া হাতির শাবকদের আগেও নিজের দুধ খাইয়ে বড় করার নজির চম্পাকলির রয়েছে। শান্ত চম্পাকলি বরাবরের মত এবারো আপাতত ত্রাতার ভূমিকায় হলং পিলখানাতে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপক্ষেত্র অধীকর্তা(পূর্ব) পি হরিশ বলেন,”মঙ্গলবার সকালেই আমরা শাবকটিকে রায়ডাক নদীর কাছ থেকে উদ্ধার করেছিলাম। হাতির দল শাবকটিকে ফেলে রেখে যায়। গোটাদিন দলে ফিরিয়ে দেবার চেষ্টা হয়েছে। তবে হাতির দলটি শাবকটিকে ফিরিয়ে নেয়নি। কোন ঝুঁকি নেইনি আমরা। বয়স মাত্র ৭ মাস। দ্রুত জলদাপাড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়।”
এদিকে বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলেন, একটি ৭ মাসের হাতির শাবকের মায়ের দুধের প্রয়োজন রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে সব স্ত্রী হাতিরা উদ্ধার করা শাবককে কাছেই ঘেঁষতে দেয় না। তখন বিপদ বাড়তে থাকে। এই ক্ষেত্রে অনেক দ্রুত নতুন মা পেয়েছে বাচ্চাটি। জানা গেছে, মায়ের দুধ ছাড়াও আপাতত চিকিৎসকদের পরামর্শ মতই দিনের নির্দিষ্ট সময়ে গুরজল, ল্যাক্টোজেন দেওয়া হচ্ছে নাম না হওয়া শাবকটিকে। হলং পিলখানায় নতুন শাবকের থাকার জন্য পৃথক ব্যবস্থা হয়েছে। দিনরাত সামনে থেকে দেখাশোনা করছেন অভিজ্ঞ মাহুতরা। মাত্র ২৪ ঘন্টাতেই সকলের আদরের হয়ে উঠেছে শাবকটি।
জলদাপাড়া বনবিভাগের সহ বন্যপ্রাণ সহায়ক দেবদর্শন রায় বলেন, “আপাতত উদ্ধার করা হাতির শাবক সুস্থ স্বাভাবিক রয়েছে। আমাদের পর্যবেক্ষণ রয়েছে সবসময়।” নতুন সদস্যটিকে ধরলে বিখ্যাত জলদাপাড়ায় বিভিন্ন বয়সের পোষা হাতির সংখ্যা দাড়ালো ৮১।

