সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ৯ আগস্ট: দামোদর নদের উপর নির্মিত বাঁকুড়ার মেজিয়া সেতু দীর্ঘদিন অবহেলায় পড়ে ক্রমশঃ ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে উঠেছে কিন্তু সংস্কার করা নিয়ে রাজ্য সরকার, রাজ্য সড়ক কর্তৃপক্ষ, সেতুর নির্মাতা ডিভিসির টালবাহানা চলছিল। অবশেষে আজ থেকে সংস্কারের কাজ শুরু করলো মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।
তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্পের কয়লা পরিবহণের জন্য রেল সেতু নির্মাণ করছিল ডিভিসি। প্রতিদিন বাঁকুড়া ও বর্ধমান জেলার কয়েক হাজার লোক খেয়া পারাপার করে যাতায়াত করতেন। ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে পাশেই সড়কসেতু নির্মাণের আবেদন জানায় তৎকালীন রাজ্য সরকার। তারপর ডিভিসি তাদের নিজস্ব অর্থে রেল সেতুর পাশে সড়ক সেতু নির্মাণ করে। পাশাপাশি দামোদরের দুই পাশের রাস্তার জন্য জমি কিনে বাইপাস রাস্তা করে সেতুটিকে জাতীয় সড়কের সাথে সংযোগ করে ২০০২ সালে তা জনগণের উদ্দেশ্য খুলে দেওয়া হয়। সেই সেতু ও রাস্তা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ব্যবহার করলেও সংস্কারের ব্যাপারে উদাসীন। দামোদরের উপর নির্মিত ৮০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুর বেশ কয়েকটি জায়গায় কংক্রিটের ঢালাই ভেঙ্গে রড বেরিয়ে বিপজ্জনক অবস্থায়। কিন্তু সংস্কার কে করবে তা নিয়ে চলছিল টালবাহানা।
জাতীয় সড়ক হিসেবে খাতায় কলমে ব্যবহার হলেও বাইপাস রাস্তা সহ সেতুটি এখনও পুরোপুরি জাতীয় সড়কের সম্পত্তি হিসেবে স্বীকৃত নয়। অন্যদিকে ডিভিসি সেতু নির্মাণ করলেও তা সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য ছেড়ে দিয়েছে। অপরদিকে রাজ্য সরকারেরও সংস্কারের এক্তিয়ারে নেই। এই অবস্থায় সেতু সংস্কারে উদ্যোগ নিয়ে মেজিয়া ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ডিভিসিকে সেতু সংস্কারের অনুরোধ জানালে ডিভিসি প্রকল্পের মেসার্স এস এন কনস্ট্রাকশনের মাধ্যমে সেতু সংস্কারের উদ্যোগ নেয়।
সংস্থার সাইট ইনচার্জ বান্টি ঢাং বলেন, কয়েক জায়গায় মরণফাঁদ হয়েছিল। বিদ্যুৎ প্রকল্পের চিফ ইঞ্জিনিয়ার তাদের অনুরোধ করেন সেতুটির খানাখন্দে কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে মেরামত করে দিতে।
মেজিয়া ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ইন্দ্রজিৎ রায় বলেন, বাঁকুড়া-রানীগঞ্জ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের মেজিয়া সেতু মেদিনীপুরের ৬ নং জাতীয় সড়ক থেকে বাঁকুড়া এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলা হয়ে উত্তরবঙ্গের সংযোগকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পথ। সেতুর বিভিন্ন জায়গায় গর্ত হয়ে বেহাল হয়ে পড়েছিল। এই সেতুর উপরের রাস্তা সংস্কারের জন্য উদ্যোগী ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান তিনি।