সাথী প্রামানিক, পুরুলিয়া, ১৯ ফেব্রুয়ারি: পুরুলিয়ায় এক সঙ্গে ২২ জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন বাতিলের প্রস্তাবকে ঘিরে সমালোচনার মুখে পড়ল দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশন। শুধু মাত্র পণ্যবাহী ট্রেনকে গুরুত্ব দিতেই এই ভাবনা বলে আদ্রা ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে। চলতি মাসের ১৫ তারিখে একটি নোটে উল্লেখ করে বলা হয়েছে এই ডিভিশনের চাণ্ডিল-আনাড়া-আসানসোল সেকশনে মূলত যাত্রীবাহী ট্রেনের কারণে লাইনে ব্যস্ততা বেড়ে গিয়েছে, সময় মতো ট্রেন চলাচলে অসুবিধা দেখা দিয়েছে। এছাড়া আদ্রা-ভজুডি-গোমো এবং আদ্রা-মেদিনীপুর শাখাতেও একই অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই, পণ্যবাহী ট্রেনের যাত্রাপথ অবাধ ও মসৃণ করতেই ২২ জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন বাতিল করার প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি বছরের ৩১ মে পর্যন্ত এটা কার্যকর করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে কবে থেকে লাগু হবে এটা পরিষ্কার করে উল্লেখ করা হয় নি ওই নোটসিটে। দেখা গিয়েছে, প্রস্তাবিত বাতিল ওই অধিকাংশ ট্রেন যাত্রীদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং রেলের বাণিজ্যিকভাবে লাভদায়ক। এর মধ্যে আরণ্যক ও রাজ্যরানি এক্সপ্রেস, রাঙ্গামাটি সুপারফাস্ট,সুবর্ণরেখা সুপার ফাস্ট তো রয়েইছে।
রেলের এই ভাবনার তীব্রভাবে প্রতিবাদ করেছেন পুরুলিয়াবাসী। পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা শিক্ষক শংকর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘এখন যোগাযোগ বাড়ানোর বদলে কমে যাচ্ছে। এ যে উলট পুরাণ! কম খরচে আরামদায়ক বলে রেলে যাতায়াত করেন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষ। মূলত পুরুলিয়া জেলায় এই শ্রেণির মানুষই বেশি। এই অবস্থায় রেলের এই প্রস্তাবের নিন্দা করছি। এই রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি বেসরকারিকরণের প্রথম ধাপ বলে মনে হচ্ছে।’
রেলের এই প্রস্তাবের বিরোধীতা করছেন রাজনৈতিক দলগুলিও। প্রদেশ কংগ্রেস নেতা পুরুলিয়ার বাসিন্দা পার্থ প্রতীম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে রেল রোকো আন্দোলোনের পথে যাচ্ছি আমরা।’ পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকেও এর প্রতিবাদ করা হয়েছে। অবশ্য এই খবর পেতেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি সরকারীভাবে না জানলেও এই নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। এছাড়া পুরুলিয়াবাসী যাতে সমস্যায় না পড়েন সেই দিকটিও দেখব।’