আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ৩০ আগস্ট: ফের শ্যুট আউটের ঘটনা উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দল থানা এলাকায়। এবার মহরমের আসরে শনিবার রাতে প্রকাশ্যে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হল এক কিশোরকে। মৃত ওই কিশোরের নাম আব্দুল ওয়াকার (১৬)।
জানাগেছে, নিহত যুবক শনিবার রাতে জগদ্দল থানার পিছনের ৫ নম্বর গলিতে নিজের সঙ্গীদের সঙ্গে রাস্তার উপর মহরম উৎসব পালন করছিল। স্থানীয় সূত্রের খবর, রাত ১১টা নাগাদ ৫ নম্বর গলি দিয়ে ৩ টি বাইকে চেপে ৮/৯ জন দুষ্কৃতীর একটি দল যখন যাচ্ছিল, সেই দলটি হঠাৎ মহরমের উৎসবে মেতে থাকা কিশোরদের সামনে রাস্তায় যেতে গিয়ে আটকে পড়ে। সেই সময় ওই দুষ্কৃতীরা সকলেই বাইক থেকে নেমে পড়ে এবং রাস্তা থেকে কিশোরদের সরে যেতে বলে। ওই এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কিশোররা সেই সময় বাজনা বাজিয়ে মহরম উৎসবের আনন্দে মশগুল ছিল। তাদের মধ্যেই উপস্থিত ছিল ১৬ বছরের আব্দুল ওয়াকার। ওই দুষ্কৃতীদের সঙ্গে স্থানীয় কিশোরদের বচসা শুরু হলে, কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই দুষ্কৃতীরা সকলে আগ্নেয়াস্ত্র বের করে এলাকার বাসিন্দাদের ভয় দেখাতে শুরু করে। তখনই এক দুষ্কৃতী প্রথমে শূন্যে ১ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে, পরে সে খুব কাছ থেকে আব্দুল ওয়াকারের মাথায় গুলি করে। সঙ্গে সঙ্গে আব্দুল ওয়াকার রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এই ঘটনায় হুড়োহুড়ি পড়ে যায় । দুষ্কৃতীরা বাইক নিয়ে সকলে পালিয়ে গেলেও এক দুষ্কৃতিকে তাড়া করে ধরে ফেলে এলাকার বাসিন্দারা। তাকে গণধোলাই দেয় সকলে। জগদ্দল থানার পুলিশ রক্তাক্ত আব্দুল ওয়াকারকে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ওই যুবককে মৃত ঘোষণা করে।
এদিকে জানা গেছে, আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুষ্কৃতীকে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। নিহত যুবকের বাবা রুস্তম আনসারী বলেন, “আমার একমাত্র সন্তানকে সাদ্দাম, পঙ্কজ, রশিদদের দল গুলি করে হত্যা করল। আমার ছেলে মহরম পালন করছিল ওর বন্ধুদের সঙ্গে। সেখানেই অকারণে ওই দুষ্কৃতীরা গুলি করে মেরে ফেলল আমার ছেলেকে । ওদের মৃত্যুদণ্ড দাবি করছি প্রশাসনের কাছে।”

এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে জগদ্দল এলাকা জুড়ে। ৫ নম্বর গলিতে বন্ধ হয়ে গেছে মহরমের উৎসব। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অবিলম্বে অভিযুক্ত দুষ্কৃতীদের সকলকে গ্রেপ্তার করুক পুলিশ। জগদ্দল থানার ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে যেভাবে উৎসবের মধ্যে শ্যুট আউটের ঘটনা ঘটেছে, তাতে দুষ্কৃতীদের বারবাড়ন্ত নিয়ে উদগ্রীব এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দারা সকলেই অভিযোগ করেছেন, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার জন্যই দুষ্কৃতীদের সক্রিয়তা বেড়েছে জগদ্দল থানা এলাকায়। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

