আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ১৬ সেপ্টেম্বর: অতিবৃষ্টিতে বাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হল এক আদিবাসী মহিলার। জখম আরও চারজন। তাদের মধ্যে একজনের আঘাত গুরুতর বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত মহিলার নাম দুলের হেমরম (৫৭)। গুরুতর জখম অবস্থায় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তারই বউমা মামই হেমরম (৪৩)। আহতরা হলেন লক্ষ্মী হেমরম (১৬), মুংলি হেমরম (২২) ও সুনীল হেমরম (১৭)। তারা মৃত মহিলার নাতি ও নাতনী। তাদের মল্লারপুর ব্লক হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের বাড়ি বীরভূমের মল্লারপুর থানার ডুমরা গ্রামে।
জানা গিয়েছে, পেশায় দিনমজুর ওই পরিবারের বাড়িটি দীর্ঘদিন ধরেই জরাজীর্ণ ছিল। পঞ্চায়েতে আবেদন করার দীর্ঘদিন পর প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি মিললেও সেই বাড়িতে থাকা হল না আদিবাসী মহিলার।
মৃত মহিলার ভাইজি মুংলি কিস্কু বলেন, “রাতে মাটির বাড়ির মধ্যে সকলে শুয়ে ছিল। তিনদিন ধরে বৃষ্টির ফলের মাটির ভিত দুর্বল হয়ে যায়। ফলে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টা নাগাদ দেওয়াল ভেঙ্গে পড়ে। এলাকার মানুষ পাঁচ জনকে উদ্ধার করে প্রথমে মল্লারপুর ব্লক হাসপাতালে ও পরে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তিনজনকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এখন একজন রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।”
আদিবাসী মহিলার মৃত্যুতে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে এলাকায়। ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের বাজিতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ডুমরা গ্রামে অধিকাংশ বাসিন্দা আদিবাসী। দিনআনি দিনখাই অবস্থা ওই সমস্ত পরিবারের অধিকাংশ বাড়ি ছিটেবেড়ার। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় আজও অনেকেরই বাড়ি মেলেনি। মৃত দুলের হেমরমের বাড়ি মিললেও তিনি জীবদ্দশায় সেই বাড়িতে ঢুকতে পারলেন না।
বিজেপির ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর মণ্ডল সভাপতি শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পঞ্চায়েত প্রধানের পক্ষপাতিত্বের কারনেই অকালে মৃত্যু হল দুলের হেমরমের। আমরা পঞ্চায়েতের কাছে বার বার দাবি জানিয়ে মৃত মহিলার জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি অনুমোদন করিয়েছিলাম। সেই বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু বাড়ি সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই মৃত্যু হল দুলের হেমরমের। পঞ্চায়েতের অবহেলাতেই মৃত্যু হল দুলের হেমরমের।”
যদিও মৃত মহিলা প্রধানমন্ত্রী আবার যোজনার বাড়ি পেয়েছেন কিনা তা জানা নেই পঞ্চায়েত প্রধান পারশমণি মুর্মুর।