পুজোর আবহ পুরুলিয়ায়, প্রাচীন প্রথা মেনে কাঠামোতে পড়ল মাটি, কোথাও মৃন্ময়ী রূপ পেলেন দুর্গা

সাথী দাস, আমাদের ভারত, পুরুলিয়া, ২৩ জুন: পুরুলিয়া জেলা জুড়ে শুরু হয়ে গেল শারদ উৎসবের প্রস্তুতি। রথ যাত্রা উপলক্ষ্যে রীতি ও প্রথা মেনে কোথাও কুমোর পাড়া থেকে মৃন্ময়ী রূপী দুর্গা ঠাকুর দালানে প্রবেশ হল কোথাও আবার পরম্পরা মেনে দুর্গার কাঠামোতে মাটি দিয়ে প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু হল। পুরুলিয়া জেলার গ্রামাঞ্চলের বনেদি বাড়ি এবং বারোয়ারী পুজোয় এই দৃশ্য দেখা গিয়েছে এদিন।

পুরুলিয়া শহরের সাধুরডাঙ্গা এলাকায় বাগালবাবার আশ্রমে সাত দশকের বেশি সময় ধরে পুজো হয়ে আসছে। আজকের এই বিশেষ দিনে কুমোর পাড়া থেকে তিন মাটি চড়ানো মৃন্ময়ী আচার নিয়ম মেনে ঠাকুর দালানে নিয়ে যাওয়া হল। এই প্রাচীন রীতি প্রসঙ্গে মন্দিরের পুরোহিত ও সেবাইত শিব দাস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আজকের দিনে মা মৃন্ময়ী রূপে বাড়িতে আসেন। ঘট দিয়ে পুজো না হলেও আজ থেকেই দেবীর আরাধনা এক প্রকার হয়ে থাকে। জিতাষ্টমীর পর দিন বোধনের দিন থেকেই পুজো শুরু হয়ে যায়।’ 

পুরুলিয়া শহরের নামোপাড়ায় নীলকন্ঠ পরিবারের প্রাচীন পুজোর প্রস্তুতি করোনা আবহেও। কাঠামোতে মৃৎশিল্পী মাটি দিয়ে মূর্তি গড়ার কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করলেন আজ। প্রাচীন পারিবারিক পুজোর এই রীতি ও পরম্পরা মলিন হয়ে যায়নি। নীলকণ্ঠ চট্টোপাধ্যায় পরিবারের ঠাকুরদালানে রথযাত্রার দিন এই আচার দেখা গিয়েছে। বাজলো ঢাকের বাদ্যি। ঠাকুরদালানে দুই ক্ষুদের ঢাকের বোল জানান দিল পুজোর বেশি দেরি নেই। স্থানীয় কোরক সাংস্কৃতিক সংস্থার দুই নাট্য শিশু শিল্পী কুলদীপ সূত্রধর ও মোহিত দেওঘরিয়া ঢাক বাজিয়ে ঠাকুর দালানে পুজোর আবহ এনে দেয়।

৩০০ বছরের প্রাচীন এই রীতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায় বলেন,’করোনা আবহে পুজোর রীতির বদল হয়নি। আশাকরি পুজোর দিনগুলি জাঁকজমকভাবেই কাটবে।’

স্থানীয় বাসিন্দা সুদিন অধিকারী বলেন,’পারিবারিক পুজোর রীতি আমাদের আবেগ উসকে দেয়। পুজোর প্রস্তুতি এক-একটা পর্যায় আমাদের প্রত্যাশায় পৌঁছে দেয়। নামোপাড়ার নীলকণ্ঠ চট্টোপাধ্যায় পরিবারের এই পুজো পারিবারিক হলেও প্রতিটি পুজোর পর্যায়ে সমান ভাবে উপভোগ করি আমরা ।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *