সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ১৯ ডিসেম্বর: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘ইউনাইটেড ইন্ডিয়া নাগরিক সিটিজেন’ বলে ভারতের সার্বভৌমত্বের কথা প্রচার করলে ভাইপো অভিষেকও কম যান না। ‘সিএএ’ অর্থাৎ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের নতুন অর্থ বার করলেন তিনি। তৃণমূল ছাত্র-যুবর ডাকে ধর্মতলার রানি রাসমণি রোড থেকে এআরসি-সিএএ বিরোধী মঞ্চ থেকে অভিষেক বলেন, “বিজেপির কাছে সিএএ-এর অর্থ সিটিজেন্স অ্যামেডমেন্ট বিল হলেও বাংলায় ‘সিএএ’ মানে ছিনিয়ে আনবো অধিকার।”
পাশাপাশি, অভিষেক কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ও মোদি-শাহকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আপনারা উত্তর প্রদেশে যা করতে পারেন, সেটা বাংলায় করা যাবে না। এই বাংলা বিবেকানন্দ, নেতাজি, বিদ্যাসাগর, ক্ষুদিরাম, রবীন্দ্রনাথ, রামমোহন, মাতঙ্গিনী হাজরার পবিত্র বাংলা। এটা সম্প্রীতির বাংলা। এখানে বিভাজনের রাজনীতি চলবে না”। এরপরই অভিষেকের প্রশ্ন, “মোদি-অমিত শাহের এনআরসি, নোটবন্দি, জিএসটি-এর জন্য যে মানুষগুলিকে মরতে হয়েছে, তাঁদের মধ্যে বড়লোক ক’জন? বারবার মরতে হচ্ছে গরিবদেরই। আর বড়লোকরা আপনাদের সাহায্যে দেশ লুটে বিদেশে পালাচ্ছে। ”
এখানেই থেমে থাকেননি অভিষেক। মোদি-অমিত শাহকে একহাত নিয়ে বলেন, “অসম, ত্রিপুরা, মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রীরা ইস্তফা দিন। বলুন ওই রাজ্যের সরকার অবৈধ। যাঁদের ভোটে আপনি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন, যাঁরা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছেন, তখন জানতে চাননি কেন, তাঁরা নাগরিক কি না?”
বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে অভিষেক বলেন, “আমার মানুষের আন্দোলন গড়ে তুলেছি রাজপথে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ নয়, শুরু থেকেই প্রতিবাদ করছেন। তাঁর দাবিকে মান্যতা দিয়ে এখন অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও এনআরসি-সিএএ বিরোধিতা করছে। আসলে বাংলাই চিরকাল পথ দেখিয়েছে। আমি বিজেপির নেতা-মন্ত্রীদের চ্যালেঞ্জ করে বলছি, কেবিনেটের ৫ জন মন্ত্রীও যদি নিজের ঠাকুরদা আর ঠাকুমার জন্ম সার্টিফিকেট দেখান, তাহলে ইস্তফা দেব।” তিনি আরও বলেন, ‘আন্দোলন করতে গিয়ে বিজেপির প্ররোচনায় পা দেবেন না। শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন করুন। আমি এখানে বলে যাচ্ছি, জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দেব, কিন্তু বিজেপির কাছে মাথানত করবো না।’