পার্থ খাঁড়া, মেদিনীপুর, ১৮ ফেব্রুয়ারি: তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের দু’সপ্তাহের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরের মাতকাতপুর গ্রামের বাসিন্দাদের ১৫০ বছরের একটি স্বপ্ন সত্যি হল। ১৪ মধ্যেই জমির পাট্টা পেলেন গ্রামের মানুষ। শুক্রবার, খড়্গপুর-১ ব্লকের বিডিও অফিস চত্বরে প্রাপকদের আনুষ্ঠানিকভাবে জমির দলিল হস্তান্তর করার পর গ্রামবাসীরা অভিভূত হয়ে পড়েছেন।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেশপুরে একটি জনসভায় যোগ দিতে যাওয়ার সময় মাতকাতপুর এবং মোহনপুর গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা করেন। গ্রামবাসীরা তাঁকে জানান যে তাঁরা কয়েক বছর ধরে কাঁসাই নদীর তীরে বসবাস করছেন। কিন্তু জমির কোনো চুক্তিপত্র না থাকায় তাঁরা সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের এই সমস্যার দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন এবং আশ্বাসের দুই সপ্তাহের মধ্যে মোহনপুর ও মাতকাতপুরের বাসিন্দারা গতকাল তাঁদের হাতে জমির পাট্টার কাগজপত্র পেয়ে গিয়েছেন।
শুক্রবার বিডিও অফিসে পাট্টা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কোঅর্ডিনেটার, মন্ত্রী শিউলি সাহা, বিধায়ক অজিত মাইতি, বিধায়ক জুন মালিয়া, জেলা পরিষদের সভাপতি উত্তরা সিংহ হাজরা এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খুরশিদ আলি কাদরি।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খুরশিদ আলি কাদরি বলেছেন, “আজ ২০৯ জনকে জমির পাট্টা প্রদান করা হয়েছে। এটি সম্ভবপর করার জন্য আমরা সবাই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ করেছি। যাঁরা জমির পাট্টা পেয়েছেন তাঁরা এখন বেশ কয়েকটি সরকারি পরিষেবা পেতে সক্ষম হবেন।”
এই সমস্যার দ্রুত সমাধানের কথা উল্লেখ করে বিধায়ক দীনেন রায় বলেছেন, “এই এলাকায় জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের সমস্যা ছিল। এখন সমস্যার সমাধান হওয়ায় গ্রামবাসীরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন। এই গ্রামের প্রায় সকলেই আর্থিকভাবে দুর্বল।”
আনন্দে অভিভূত এক গ্রামবাসী ঊর্মিলা রায় বলেছেন, “শ্রী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমি আমার অন্তর থেকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের পূর্বপুরুষরা প্রায় ১৫০ বছর ধরে এখানে বসবাস করলেও, বাড়িটি নদীর ধারে অবস্থিত বলে আমরা সেই জমির পাট্টা পাইনি। আমরাও এতদিন সরকারি সুবিধাগুলি থেকে বঞ্চিত ছিলাম। শ্রী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৪ ফেব্রুয়ারি এখানে পরিদর্শনে এসেছিলেন এবং আমরা কয়েক দিনের মধ্যে সেই জমির পাট্টা হাতে পেয়ে গিয়েছি। আমার যে কী আনন্দ হচ্ছে তা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।”
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা সূর্য রায় বলেছেন, “আমি কখনই ভাবিনি যে আমরা জমি লিজের কাগজপত্র সত্যিই কোনোদিন হাতে পাবো। আজ আমাদের জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় দিন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের বাড়িতে গিয়ে সমস্ত সমস্যার কথা শুনেছিলেন এবং তিনি তাঁর কথা রেখেছেন।”