আমাদের ভারত, ১২ মার্চ: বিভিন্ন রাজ্যে বিধানসভা ভোটের এই ফলাফলে তৃণমূলকে তোপ দাগলেন রাজ্যের প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। তৃণমূলকে বিজেপির ‘বি টিম’ বলে চিহ্ণিত করে তৃণমূল সুপ্রিমো সম্পর্কে লিখেছেন, “রাজনীতির আঙিনায় এরকম বিশ্বাসঘাতক রাজনীতি খুবই বিরল।”
‘অতি দর্পে হত লঙ্কা’ শিরোনামে মান্নান লিখেছেন, “সম্প্রতি পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে অর্ধেকের কম জনসমর্থন পেয়েও সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হয়ে সাম্প্রদায়িক ও স্বৈরাচারী শক্তির ক্ষমতাসীন হওয়া খুবই উদ্বেগের বিষয়। একজন কংগ্রেস কর্মী হিসেবে আমার কাছে খুবই বেদনাদায়ক। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসকে অতীতে এরকম অনেক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। অসংখ্য কংগ্রেস কর্মী ও নেতা সাহসের সাথে তার মোকাবিলা করতে গিয়ে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন এমনকি প্রাণ পর্যন্ত বিসর্জন দিয়েছেন। জাতীয় কংগ্রেসকে আগামী দিনে আরও কঠিন লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। কিন্তু এই নির্বাচনে কিছু তথাকথিত ধর্মনিরপক্ষ ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের ঘৃণ্য ভণ্ডামি ও আচরণ দেখে মানুষ স্তম্ভিত।
কয়েক মাস আগে এই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি টিএমসি গড়াপেটা করে গোপন সমঝোতা অনুযায়ী ধর্মনিরপক্ষ ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে পরাস্ত করে। তৃণমূল সুপ্রিমো এর ফলে নিজেকে দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভাবতে থাকেন। এর জন্য স্তাবকদের সক্রিয় করতে গরিব মানুষের লুণ্ঠিত হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে। মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য নিজেকে বেশি বিজেপি বিরোধী বলে প্রচার করতে থাকে। এই ছল চাতুরি যে কংগ্রেসকে হারানো এবং বিজেপিকে জেতানো তা রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ অনেক আগেই বুঝতে পেরেছিলেন। গোয়া সহ কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে তা আরও বেশি করে প্রত্যক্ষ করলেন।
এর পরেও তৃণমূল সুপ্রিমো নিজেকে এবং তাঁর দলকে বিজেপির বি টিম বলে অস্বীকার করেন কোন লজ্জায়? জাতীয় কংগ্রেস তাঁকে নেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করল এমনকি সনিয়াজী তাঁকে বিশ্বাস করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হতে মৃতপ্রায় তৃণমূলকে সব রকমের সহযোগিতা করলেন। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরই তিনি কংগ্রেসকে খতম করতে বিজেপির সাথে গোপনে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলেন। রাজনীতির আঙিনায় এরকম বিশ্বাসঘাতক রাজনীতি খুবই বিরল। বিশ্বাসঘাতকতার ফল একদিন তিনি পাবেন। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের গানের ভাষায় বলি “চির দিন কাহারও সমান নাহি যায়। আজ যে রাজাধিরাজ কাল সে ভিক্ষা চায়।”