আব্বাস সিদ্দিকী ও ওয়েসির দল করার অধিকার আছে, বললেন দিলীপ ঘোষ      

আমাদের ভারত, হাওড়া, ১২ জানুয়ারি: আব্বাস সিদ্দিকী ও ওয়েসির দল করার অধিকার রয়েছে। ওয়েসি দল করলে দিদির এত টেনশন কেন? ওয়েসির দল করা শুনে দিদিমনির খাওয়া-দাওয়া উঠে গেছে। মিম–এর তাদের মত পার্টি করার অধিকার আছে। আপনি যদি মুসলমানদের জন্য কাজ করে থাকেন তাহলে তারা এমনিই আপনাকে ভোট দেবে। পাঁচলার ধামসিয়ায় বিজেপির হাওড়া গ্রামীণ জেলার ডাকে এক জনসভায় এই কথা বলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

এদিন বহিরাগত প্রসঙ্গে তৃণমূলকে একহাত নেন দিলীপ ঘোষ। তৃণমূলের পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোরের নাম না করে তিনি বলেন, গান্ধীর ছবি নিয়ে যে পার্টি অফিসে বসে আছেন, তিনিও তো গুজরাটের লোক। বিহার থেকে লোক এনে ভোট করলে তিনি বহিরাগত নন, এমনকি পাঞ্জাব থেকে বউ নিয়ে এলে তিনিও বহিরাগত নন। আর ভারতের অন্য কোনো রাজ্যের লোক এখানে আসলেই তারা বহিরাগত। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ সারা ভারতবর্ষে গিয়েছে। অন্য রাজ্যের শিল্পপতিরা এখানে এসে শিল্প বাণিজ্য করে লোকের চাকরি বাকরি দিচ্ছে। আমরা বিদেশের মানুষদেরও গ্রহণ করেছি সিস্টার নিবেদিতাকে, টেরিজা কে মাদার সম্মোধন করে গ্রহণ করেছি। বাংলার প্রচুর ছেলে অন্যত্র কাজ করছে। তারা যদি বলে বাঙালি হটাও, তাহলে ৪০ লক্ষ লোক এখানে ফিরে এলে আপনি কাজ দিতে পারবেন তো?– দিলীপবাবুর প্রশ্ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

এদিন তিনি মুসলমানদের প্রসঙ্গে বলেন দেশে ছ’বছর বিজেপি শাসন করছে। এর আগে বাজপেয়ী শাসন করেছে। কোথাও কোনো মুসলমানকে বের করে দেওয়া হয়েছে এরকম কোনও প্রমাণ নেই। বরং পশ্চিমবঙ্গে দাঙ্গা হয়েছে বেশি। দাঙ্গা হলে গরিব মানুষের ক্ষতি বেশি হয়।  এদিন দিলীপ ঘোষ অভিযোগ করেন কাটমানি টাকা না পেলে দিদি কোনও প্রকল্পের অংশ নেন না। আমফান ঝড়ে মোদি এক হাজার কোটি টাকা দিয়ে পরীক্ষা করেছিলেন। কিন্তু সেই টাকা সব উড়ে গেছে। তিনি বলেন, মানুষ সব টাকা পাবেন, সব সুবিধা পাবেন এই রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে।

স্বাস্থ্য সাথী কাড নিয়ে ও রাজ্য সরকারকে একহাত নেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড পেলেন অথচ সুযোগ পেলেন না, তাহলে স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড মাথায় নিয়ে শুয়ে থাকলে কি জ্বর কমবে? সরকারের বাজেট ১২ কোটি টাকা। আর ১০ কোটি মানুষের ৫ শতাংশ মানুষের স্বাস্থ্য সাথীর কার্ডের টাকা দিতে গেলে পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা লাগবে। এই চার মাস রয়েছে সেই চার মাসেও যদি স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের টাকা দিতে হয় তাতেও সরকারের লাগবে সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সরকারের বাজেট ১২ হাজার কোটি টাকা। তাই স্বাস্থ্য সাথীর টাকা পেয়ে সুবিধা না পেলে কার্ড মাথায় দিয়ে শুয়ে থাকলে কি জ্বর ভালো হবে? আমি স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড এর বিরোধিতা করছি না। দিদিমণি যেভাবে মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে তার বিরোধিতা করছি। 

এদিনের জনসভায় বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কোনও জিনিষের যেরকম এক্সপায়ারি তারিখ থাকে সেইরকম তৃণমূলের এক্সপায়ারি তারিখ ২০২১ সালের মে মাসে। তিনি বলেন, রাজ্যে তৃণমূল শাসক নয়, শোষকের ভূমিকা পালন করছে। তৃণমূল বাংলাকে শোষন করছে। জয়ের দাবি, স্বাধীনতার পর এই প্রথম বাংলা ভালো শাসক পেতে চলেছে। তিনি জানান, বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় আসার পর বাংলা সোনার বাংলায় রূপান্তরিত হবে।

এদিনের এই সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে ৫০০ কর্মী বিজেপিতে যোগ দেয়। দলে যোগ দেওয়া কর্মীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

এদিনের এই জনসভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা রাজকমল পাঠক, অনুপম মল্লিক, বিজেপির হাওড়া গ্রামীণ জেলা সভাপতি প্রত্যুষ মন্ডল, বিজেপির হাওড়া সদরের সভাপতি সুরজিৎ সাহা সহ অন্যান্যরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *