আমাদের ভারত, উত্তর দিনাজপুর, ২ আগস্ট: বছর দুয়েক আগে উত্তর দিনাজপুর জেলা সফরে এসে প্রশাসনিক বৈঠকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে দালাল চক্রের বিষয়ে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তার পরেও এই সরকারি হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে দালালদের আনাগোনার অভিযোগ উঠেছে। এবারে এই হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে দালাল চক্রের সক্রিয়তার দৃশ্য ফুটে উঠল।
মঙ্গলবার ব্লাড ব্যঙ্কে রক্ত বিক্রি করতে এসে ধরা পড়ল এক যুবক। ব্লাডব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, ধৃতের নাম সাজু মহম্মদ। বাড়ি রায়গঞ্জের গোয়ালপাড়া এলাকায়। ঘটনাসূত্রে জানা যায়, বালিয়া দিঘির বাসিন্দা নজরুল হকের স্ত্রী ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে। তার ১ বোতল রক্তের প্রয়োজন। নজরুল বাবু বলেন, গত কয়েকদিন আগে ১ বোতল রক্তের জন্য ব্লাড ব্যাঙ্কের কাছে বসে ফোন করছিলেন। সে সময় সেখানে ওৎ পেতে বসে থাকা সাজু এসে রক্ত দিতে রাজি হয়। এর নেপথ্যে লেনদেনের বিষয়েও আলোচনা হয়। রক্ত দেওয়ার পর টাকা দেওয়ার বিষয়ে রাজী হন নজরুল বাবু। সেই অনুযায়ী মঙ্গলবার রক্ত দিতে এসে ধরা পরে যায় সাজু। ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় হাসপাতালে। অভিযুক্তকে আটক করে নিরাপত্তারক্ষীরা। প্রথমদিকে স্বীকার না করলেও পরবর্তীতে সে জানায় এই চক্রের কথা। যার মূল পান্ডা হিসেবে উঠে আসে ধুলিয়াবান এলাকার বাসিন্দা পোহাতু নামের এক ব্যক্তির নাম।
শহরের রক্তদান কর্মসূচির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের দাবি, রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কে দীর্ঘদিন থেকেই রমরমিয়ে চলছে দালাল চক্র। নেপথ্যে চলছে বড় অংকের আর্থিক লেনদেন। তাদের বক্তব্য, রোগীর আত্মীয় সেজে ব্লাড ব্যাঙ্কের প্রতীক্ষালয়ে বসে থাকে দালালরা। তারা রোগীর আত্মীয়দের কথোপকথন ও গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে নির্দিষ্ট সময়ে নিজেদের জাল বিস্তার করে। অসহায়তার সুযোগ নিয়ে শুরু হয় রক্ত বিক্রির প্রক্রিয়া। এ বিষয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছেন রক্তদান আন্দোলনের সাথে যুক্ত সমাজ কর্মীরা।
প্রসঙ্গত, সারা রাজ্যেই রক্তের যোগান বাড়াতে যখন সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে রক্তদান, উদ্বুদ্ধকরণ সহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে তখন রক্ত নিয়ে এমন দালাল চক্রের ঘটনা যথেষ্ট বিপজ্জনক ও সামাজিক ব্যধি হয়ে দাঁড়াবে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। যদিও পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

