জন্মদিনে ভবঘুরেদের খাওয়ালেন রামপুরহাটের এক যুবক

আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ১১ এপ্রিল: প্রতিবছর এই দিনটিতে বাড়িতে আত্মীয়দের ভিড় লেগে থাকত। সন্ধ্যে হলেই বন্ধুদের নিয়ে জমিয়ে বসত আড্ডা। কাটা হত কেক। তার পরেই ভুরিভোজ। ত্রিশটি বসন্তের শেষে করোনা ভাইরাস সব উলটপালট করে দিল। চার দেওয়ালের মধ্যে জন্মদিন পালন না করে ভবঘুরেদের একবেলা খাইয়ে দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখলেন রামপুরহাটের এক যুবক।

অর্পণ নাগ। পেশায় গৃহশিক্ষক। বাবা রামপুরহাট মহকুমা শাসকের অফিসের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। মা অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মী। দাদা একটি বীমা সংস্থার এজেন্ট। পরিবারের পক্ষ থেকে দুই ছেলের জন্মদিন ধুমধাম করেই পালন করা হয় প্রতিবছর। শনিবার ছিল ছোট ছেলে অর্পণের ৩০ তম জন্মদিন। ফেলে আসা বছর গুলির মতো এবারও ধুমধাম করে জন্মদিন পালন করার কথা ছিল অর্পণের পরিবারের। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনা ভাইরাস। অনুষ্ঠান করলেই হবে জমায়েত। সেই জমায়েতে আবার সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তার থেকেও বড় কারণ হল নিজে বাঁচতে, পরিবার, প্রতিবেশী এবং দেশকে বাঁচাতে জমায়েত না করাই শ্রেয়। সেই চিন্তাভাবনা থেকেই ষ্টেশনে ভবঘুরেদের মধ্যে দুপুরে খাবার খাইয়ে নিজের জন্মদিন পালন করলেন অর্পণ।

তিনি বলেন, “বাড়িতে অনুষ্ঠান করলে একটা খরচ তো হতই। কিন্তু দেশের এই যুদ্ধে মানুষ যখন দুমুঠো খাবারের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেই সময় আমার জন্মদিন পালন করা বিলাসিতা হত। তাই ঠিক করলাম ভবঘুরেদের মুখে দুমুঠো ভাত তুলে দিতে পারলে সেটাই পরমপ্রাপ্তি হবে। যখন জানতে পারলাম পুলিশ ও সাংবাদিক বন্ধুরা ষ্টেশনে ভবঘুরেদের খাওয়াচ্ছে তখনই আমি তাদের কাছে আমার ইচ্ছার কথা বললাম। তারাই আমাকে এই খাওয়ানোর সুযোগ করে দিয়েছে”।

মা সন্ধ্যা নাগ বলেন, “ছেলে প্রথম আমাকে ভবঘুরেদের খাওয়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। আমি সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাই। এখানে খাইয়ে যা তৃপ্তি পেলাম, বাড়িতে অনুষ্ঠান করে সেই তৃপ্তি পেতাম না”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *