আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ১৮ এপ্রিল: ইচ্ছে ছিল ধুমধাম করে বিয়ে সারবেন। কিন্তু করোনা ভাইরাস সমস্ত কিছু উলটপালট করে দিয়েছে। এমনকি বিয়ের দিনক্ষণ এগিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় চার হাত এক হল বীরভূমের মল্লারপুর থানার পাহানা গ্রামে। নিষেধাজ্ঞা থাকায় বৌভাত কিংবা কনেযাত্রীদেরও আপ্যায়িত করা হয়নি।
পাত্র কালীপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। বাড়ি রামপুরহাট থানার দেখুড়িয়া গ্রামে। পরিবারের পক্ষ থেকে একমাত্র ছেলের বিয়ের জন্য হন্য হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। শেষে মুর্শিদাবাদের কান্দির ঢলপাড়ায় প্রয়াত অভিমুন্য ও অসীমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একমাত্র মেয়ের সঙ্গে বিয়ের ঠিক হয়। চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি বিয়ের পাকাকথা হয়। ঠিক ছিল ৪ মে বিয়ে হবে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারনে সব কিছু কাটছাঁট করে শুক্রবার রাতে মল্লারপুর থানার পাহানা গ্রামে চার হাত এক করা হল। সরকারি নির্দেশিকা মেনে মাত্র পাঁচজন নিয়ে বিয়ে করেন কালীপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “ঠিক ছিল তারাপীঠ মন্দিরে বিয়ে করে বাড়িতে অনুষ্ঠান করব। কিন্তু লকডাউনের কারনে বন্ধ মন্দির। মন্দিরের দরজা কবে খুলবে তাঁর ঠিক নেই। তাই শুক্রবার বিয়েটা সেরে ফেললাম। কারন যত দিন যাচ্ছে ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। মে মাসের ৪ তারিখে হয়তো আরও কড়াকড়ি হবে। তাই মেয়েকে লগ্নভ্রষ্টা অপবাদ থেকে মুক্তি দিতে বিয়েটা অনাড়ম্বর ভাবে সেরে ফেললাম”।
কালীপ্রসাদের বাবা অরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ভেবেছিলাম একমাত্র ছেলের বিয়ে ধুমাধাম করে দেব। সেই মতো কার্ড ছাপিয়ে বহু বাড়িতে নিমন্ত্রণও করা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সব আশায় ছাই ঢেলে দিল করোনা ভাইরাস। কোনওরকমে ছেলে গিয়ে বউমাকে সিঁদুরদান করে বাড়িতে নিয়ে এলো।”
কন্যা সম্প্রদান করেন মাসতুতো দাদা বিমল রায়। তিনি বলেন, “ছোটতেই বাবা-মা মারা গিয়েছে। ফলে বহরমপুরে ছোট পিসির বাড়িতে বড় হয়ে উঠেছে শ্রাবন্তী ওরফে বৃষ্টি। ঠিক ছিল তারাপীঠ মন্দির থেকে বিয়ে হবে। কিন্তু তা আর হল না। তাই আমার বাড়ি থেকেই বোনের বিয়ে দিলাম। ওরা সুখী হোক।”