স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদিয়া, ২২ নভেম্বর: নদিয়ায় এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায় নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করে সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করেছেন এক মহিলা বিএলও। নাম রিঙ্কু তরফদার, বয়স আনুমানিক ৫৪ বছর। তিনি পেশায় পার্শ্বশিক্ষক ছিলেন এবং চাপরা বাঙালি স্বামী বিবেকানন্দ বিদ্যা মন্দিরে পড়াতেন। পাশাপাশি নদিয়ার চাপড়া ২ নম্বর পঞ্চায়েতের ২০১ নম্বর বুথে বিএলও’র দায়িত্ব পালন করতেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কৃষ্ণনগরের ষষ্ঠিতলা এলাকায় স্বামীর সঙ্গে বসবাস করতেন রিঙ্কুদেবী। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গজুড়ে নির্বাচন কমিশন চালু করেছে এসআইআর ব্যবস্থা, যার অংশ হিসেবে বিএলও’দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম বিলি করতে হচ্ছে। যদিও পরিবারের দাবি, রিঙ্কু তরফদার পেশায় পার্শ্ব শিক্ষক ছিলেন। অনলাইন সম্বন্ধে এত অভিজ্ঞতা ছিল না। সব কাজ করলেও অনলাইনের কাজ করা তার বাকি ছিল। আর এই কারণেই তিনি মানসিক চাপে ভুগছিলেন।
অভিযোগ, এই অতিরিক্ত দায়িত্ব এবং মানসিক চাপের কারণে রিঙ্কু গত কয়েকদিন ধরে অস্বস্তিতে ভুগছিলেন। পরিবার ও প্রতিবেশীদের মতে, তিনি কাজের চাপ নিয়ে প্রায়ই দুশ্চিন্তায় থাকতেন। ঘটনার দিন রাতেও স্বামী-স্ত্রী স্বাভাবিকভাবেই ঘুমাতে যান। কিন্তু ভোরবেলায় ঘুম ভাঙার পর রিঙ্কুর স্বামী দেখতে পান স্ত্রী পাশে নেই। বাড়ির ভেতরে খোঁজাখুঁজি করতে গিয়ে তিনি পাশের ঘরে রিঙ্কুর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় কোতয়ালি থানায়। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।

সূত্রের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে, যেখানে রিঙ্কু নির্বাচন কমিশনকে তার মানসিক চাপের জন্য দায়ী করেছেন বলে জানা যায়। এই খবর জানাজানি হতেই কৃষ্ণনগরজুড়ে আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সহকর্মী থেকে শুরু করে প্রতিবেশীদের অনেকেই জানিয়েছেন, নির্বাচন সংক্রান্ত বাড়তি দায়িত্ব প্রায়ই বিএলও’দের উপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি করে, যার ফলে অনেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। তবে সুইসাইড নোটের সত্যতা ও ঘটনার পেছনের প্রকৃত কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। কোতয়ালি থানার পুলিশ জানিয়েছে, তারা গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।

