সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, বনগাঁ, ৮ মে: করোনায় আক্রান্ত না হয়েও এক ঘরে হয়ে দিন কাটাচ্ছেন এক পরিচালিকা সহ তার পরিবার। তাদের অপরাধ ওই পরিচালিকা যে বাড়ি কাজ করতেন সেই বাড়ির এক মহিলা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তারপর থেকেই তাদের এক ঘরে করে রাখা হয়েছে। পরিচালিকার নাম মিনতি শীল।
জানাগিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ থানার কালীবাড়ি এলাকার বাসিন্দা এক গৃহবধূ দিন কয়েক আগে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল। তার সংস্পর্শে যারা ছিলেন তাদের প্রশাসন ও বনগাঁ পৌরসভার পক্ষ থেকে কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেয়। সেই মতো ওই বাড়ির পরিচালিকা মিনতিদেবী ও তার পরিবারকে কোয়ারান্টাইনে থাকতে বলেন। ওই এলাকা বাঁশ দিয়ে ঘিরে রেডজোন করে দেওয়া হয়। এই অবস্থায় প্রশাসন ও পৌরসভা থেকে জানিয়েছিল তাদের খাবার ও সমস্ত কিছু দিয়ে সাহায্য করা হবে। প্রশাসন ও পৌরসভা থেকে সে কথা বললেও প্রথম দিন দুই বোতল জল ও কিছু খাবার দিয়ে দায় সেরেছে। তারপর কেটেছে বেশ কয়েক দিন তাদের আর কেউ খাবার দেয়নি। প্রায় অনাহারে দিন কাটছে তাদের।
এই অবস্থায় আশপাশের প্রতিবেশীরা তাদের সাহায্য করা তো দূরে থাক তারা উল্টে বলছে তোমরা পাপ করেছ তাই তোমরা পাপের ফল ভোগ করছ। এমনকি পৌরসভার নিদানে কল থেকে জল পর্যন্ত আনতে পারছে না। তাই নিজেদের কলের ঘোলা, পচা দুর্গন্ধ যুক্ত জল খেতে বাধ্য হচ্ছে। অসহায় অবস্থায় দিন কাটাছে গোটা পরিবার। এই অবস্থায় বনগাঁ পৌরসভা, কন্ট্রোল রুমে বার বার ফোন করলে দেখছি বলে ফোন রেখে দেয় বলে মিনতিদেবী জানায়। তিনি বলেন, প্রথমদিন যা খাবার দিয়েছে তা দুদিন আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। ঘরে জ্বালানি নেই তেল নেই। কলের জলে দুর্গন্ধ তাই খেয়ে দুদিন আছি।
প্রাতিবেশী রীতা তরফদার, বিশ্বজিত কুন্ডু ও রাধারানী পাল বলেন, পৌরসভা থেকে সব দায়িত্ব নিয়েছিল। প্রথম দিনের পর আর দেখা মেলেনি তাদের। গত রাতে ওই বাড়িতে কান্নাকাটি পড়ে গিয়েছিল জলের জন্য। পৌরসভা দায়িত্ব নিয়ে কি ভাবে এড়িয়ে গেল?
এই বিষয়ে বনগাঁ পৌরসভার চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যকে জানালে তিনি বলেন, বিষয়টা আমি এখনি দেখছি।
বিজেপি নেতা দেবদাস মণ্ডল বলেন, বনগাঁ পৌরসভা যে কথা মানুষকে দেয় সে কথা রাখে না। এটা রাজ্যেও তাই। ঘটনার কথা জানার পর দেবদাস মণ্ডল বলেন, ওই পরিবার যতদিন কোয়ারেন্টাইনে থাকবে ততদিন তাদের খাবার ও জলের দায়িত্ব ভারতীয় জনতা পার্টির। তিনি তড়িঘড়ি জল ও খাদ্য সামগ্রী পাঠিয়ে দেন।