লকডাউনে মুখের স্বাদ ফেরাতে দুঃস্থদের মাছ বিতরণ করল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা

স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদিয়া, ১০ এপ্রিল:
লকডাউনে গরিব, দুঃস্থদের মধ্যে মাছ বিতরণ করা হল। রাজ্যে যখন সব জায়গায় দুঃস্থ মানুষদের চাল, আলু দেওয়া হচ্ছে সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ব্যাতিক্রমী নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানার শিব নিবাসের আঠারো আগস্ট পরিচালন সমিতি।

কেউ দিচ্ছেন দুঃস্থ গরীবদের রান্না করা খাবার। আবার কোনও সংস্থার লোকজন তাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন রান্না করে খাওয়ার জন্য চাল ডাল আলু সহ বিভিন্ন জিনিসের প্যাকেট। তবে সেইসব সামগ্রীর মধ্যে মূলত চাল, ডাল, তেল, নুন, আলু এই ধরনের জিনিসই সবথেকে বেশি। কিন্তু লকডাউনের কারণে বাড়িতে থাকা সেই সব মানুষদের খাবারের রুচিরও তো বদলের প্রয়োজন। ভালো খাবার খেতে কার না ভালো লাগে? বিশেষ করে মাছে ভাতে বাঙ্গালির ক্ষেত্রে এক পিস মাছ খাওয়ার ইচ্ছা তো জাগতেই পারে। আর সেই ইচ্ছের বিষয়টা অনুভব করতে পেরেছেন নদিয়ার আঠারো  আগস্ট পরিচালন কমিটির সদস্যরা। রসনা প্রিয় বাঙালির রসনার তৃপ্তি করতে আঠারো আগস্ট পরিচালন সমিতির সদস্যরা দুস্থ, গরিব মানুষদের চাল, ডাল, তেল, নুনের সঙ্গে তুলে দিলেন পাঁচশ গ্রাম করে বাটা মাছ। মাছ রান্না করার জন্য তুলে দিলেন মাছের ঝোলের মসলাও। মাছে ভাতে বাঙালির স্বাধ মেটানোর জন্য তারা দিলেন তিন কেজি করে ফাইন চাল, দু কেজি আলু, পাঁচশ মুসুরির ডাল, পাঁচশ গ্রাম সরষের তেল, নুন, হলুদ, জিরে গুঁড়ো,  পাঁচফোরণ, পাঁচশ বাটা মাছ এবং সঙ্গে মাছের ঝোল রান্না করার মশলা।

কৃষ্ণগঞ্জ থানার শিবনিবাস, হালদারপাড়া, বাঘাযোতিন পল্লি(খাসপাড়া) সহ ওই এলাকার নিতান্তই গরিব পরিবারের মানুষের হাতে এইসব খাদ্য সামগ্রী তুলে দিলেন তারা। আগামী সোমবার চড়ক পূজো। তবে এবার লকডাউনের কারণে অনেক জায়গাতেই বসবে না চড়কের মেলা। শিবনিবাস মন্দিরের পাশে প্রতিবছর আঠারো আগস্ট পরিচালন সমিতির পক্ষ থেকে চড়ক পূজোর বিশাল মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। ভিড় করেন হাজার হাজার মানুষ। যদিও করোনার জন্য এবার সেই মেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মেলার জন্য যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়ে থাকে, সেই টাকা খরচ করেই দুঃস্থ এবং নিতান্ত গরিব মানুষদের জন্য তারা বিতরণ করলেন খাদ্য সামগ্রী। ওই সমিতির সদস্যরা অনুভব করেছেন, ঘরবন্দি বাঙালি মানুষেরা একই খাবার খেতে খেতে হয়তো তাদের মন হয়ে যেতে পারে। তাই তারা চাল, ডাল, তেল, নুনের  সঙ্গে মানুষের হাতে পৌঁছে দিলেন বাটা মাছ এবং মাছের ঝোল রান্না করার মশলা।

ওই সমিতির লোকজন জানিয়েছেন,’গৃহবন্দি  বাঙালিরা মাছ খেতে ভালোবাসেন। মাছে-ভাতে সেইসব বাঙালি যাতে ভাত, ডাল, আলু ভাজা মাছের ঝোল দিয়ে খেতে পারেন তৃপ্তি করে দুটো ভাত, সেই চিন্তা ভাবনা করেই আমাদের এই উদ্যোগ। ইচ্ছে রয়েছে, আগামী দিনেও নিতান্তই গরিব মানুষদের কাছে এই ধরনের খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *