জয় লাহা, দুর্গাপুর, ৩ সেপ্টেম্বর: ঝাড়খন্ডে প্রবল বর্ষণ। আর তার জেরে অজয় নদে হড়পা বান। আর ওই জলের তোড়ে ভেঙ্গে পড়ল কাঁকসার শিবপুরে অজয় নদীর ওপর তৈরী অস্থায়ী রাস্তা। রাস্তা ভাঙ্গায় বিপত্তি। তাতেই একপ্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন পশ্চিম বর্ধমান ও বীরভূমের বেশ কিছু গ্রামের। দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। শুক্রবার রাতে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে কাঁকসার শিবপুরে অজয় নদীতে।
কাঁকসার শিবপুরের অজয় নদীর অপরপ্রান্তে বীরভূমের জয়দেব কেঁন্দুলী। মূলত দুই জেলার যোগাযোগের অস্তায়ী রাস্তা। মকরসংক্রান্তির মেলা ছাড়াও সারা বছরই হাটবাজার সহ অন্যান্য কাজে দুই জেলার মানুষের যোগাযোগের রাস্তা ছিল অজয় নদীর ওপর। প্রতিবছরই বর্ষার জল নামলেই সিমেন্টের পাইপ বসিয়ে পাথর, মোরাম, মাটি দিয়ে রাস্তাটি তৈরী হয়। লাল মাটির ধুলো ঠেকাতে দেওয়া হয় ভাঙ্গা রাস্তার পিচের টুকরো। তার ওপর দিয়ে সাইকেল, রিক্সা ছাড়াও নানান বাস, লরি যাতায়াত করে। জয়েদেবে সপ্তাহে দুদিন আশপাশের এলাকার বড় হাট বসে মঙ্গলবার ও শনিবার। কাঁকসার শিবপুর, অজয়পল্লী সহ প্রায় ২৫টি গ্রামের কৃষক, ছোট ব্যাবসায়ী জয়দেবের ওই হাটে দোকান বসায়। এছাড়াও এপার-ওপারে স্কুল, কলেজে অনেক পড়ুয়া টিউশনি পড়তে যাওয়া আসা করে।
শিবপুর এলাকার মানুষের এককথায় সদর বাজার জয়দেব কেন্দুঁলী। শুক্রবার রাতভর ঝাড়খন্ডে প্রবল বৃষ্টি হয়। এছাড়াও অজয় নদী উপকুলবর্তী পান এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়। আর তাতে রাতে অজয়নদীতে আচমকা হু হু করে জল বাড়তে থাকে। শনিবার সকালে গ্রামবাসীদের নজর পড়ে জলের তোড়ে অস্থায়ী ওই রাস্তা ভেঙ্গে পড়েছে। জলস্রোত বেড়ে চলেছে। খবর পেয়ে দুর্ঘটনা ঠেকাতে তৎপর হয় স্থানীয় পঞ্চায়েত ও পুলিশ প্রশাসন। এবং ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত বন্ধ করে দেয়। পঞ্চায়েত থেকে গ্রামবাসীদের সতর্ক করা হয়েছে।
এদিকে রাত থেকে জলরাশি বাড়তে থাকার ফলে দুঃশ্চিন্তায় পড়ে এলাকাবাসীরা। নদী পারাপারে সমস্যা হয়। দুই জেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বিদবিহার পঞ্চায়েতের সদস্য গিরিধারী সিনহা জানান, “অজয় উপকূলবর্তী এলাকায় গত দুদিন থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়েছে ঝাড়খন্ডে। নদীতে জলও আসছে। তার ফলেই এই বিপত্তি। জলের তোড়ে প্রতিবছরই অস্থায়ী রাস্তাটি ভেঙ্গে পড়ে। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হয়। নদীর ওপারে জয়দেবে মঙ্গলবার ও শনিবার হাট বসে। সেখানে রুজির তাগিদে এপার থেকে প্রায় শ’ দুয়েক সবজি বিক্রেতা, অন্যান্য হকার জয়দেব হাটে দোকান বসাতে যায়। রাস্তা ভেঙ্গে পড়ায় তাদের রুজিতে টান পড়ল। বার বার এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন। আমরা বিষয়টি ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছি। জলের স্রোত কমলে দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে। নৌকা চলাচল শুরু হবে।”