রাজেন রায়, কলকাতা, ২ জুলাই: ২৪ ঘন্টা আগেই পুরসভা-স্বাস্থ্যভবনের গড়িমসিতে আমহার্স্ট স্ট্রিটের ঘটনায় ৪৬ ঘন্টা দেহ পড়ে থাকার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু তারপরেও যেন হুঁশ ফেরেনি। ফের উলটোডাঙায় করোনায় এক মিষ্টি ব্যবসায়ীর মৃত্যুর পরেও ১৬ ঘন্টা দোকানেই পড়ে রইল দেহ। সূত্রের খবর, উল্টোডাঙার গৌরীবাড়ি এলাকার একটি মিষ্টির দোকানের ব্যবসায়ীর করোনা সংক্রমণের জেরে মত্যু হয়। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে দেহ সৎকারে কেউ এগিয়ে আসেননি।
জানা গিয়েছে, ৭ দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন ব্যক্তি। গত মঙ্গলবার করোনা পরীক্ষা হয় তাঁর, পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। বুধবার বিকেলে দোকানেই মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। তারপর থেকে দোকানেই পড়ে ছিল দেহ।
বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত সেই রিপোর্ট হাতে না আসায় দেহ সরাতে পুলিশ এবং পুরসভা উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ। যদিও স্থানীয় মানুষজন তাঁর দেহ ফ্রিজারে রাখার কথা বলেছিলেন। সেই ফ্রিজারে রাখার জন্য ব্যবস্থাও করেন পরিবারের লোকেরা। বৃহস্পতিবার সকালে ওই ব্যক্তির রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর অবশ্য নিয়ম মেনে তাঁর শেষকৃত্যের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার বিকেল থেকে ওই ব্যক্তি অসুস্থ বোধ করেন। করোনার উপসর্গ থাকায় তার আগে একটি বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে কোভিড-পরীক্ষাও করান তিনি। ওই রাতে শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় প্রথমে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানান, ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, এর পর ওই ব্যক্তির মৃত্যুর শংসাপত্র দিতে চাননি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এর পর স্থানীয় যে চিকিৎসককে দেখিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি, তাঁর কাছে দেহ নিয়ে যাওয়া হয়। তিনিও শংসাপত্র দিতে অস্বীকার করেন। ফলে মিষ্টির দোকানেই পড়ে থাকে দেহ।
এরপর এ দিন দুপুরের পর কলকাতা পুরসভা এবং পুলিশ উদ্যোগী হয়। যদিও পুরসভার দাবি, নিয়ম না জেনে কিছু মানুষ অনর্থক উত্তেজনার চেষ্টা করছেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং আইসিএমআর গাইডলাইন অনুযায়ী ওই ব্যবসায়ীর মৃতদেহ সৎকার করা হয়েছে। সেই পদ্ধতি অনুসরণ করা না হলে তাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠত।