পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩০ নভেম্বর: বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের কেশিয়াড়িতে হাতির হানায় মৃত্যু হলো এক স্কুল ছাত্রের। মৃত ছাত্রের নাম দেবপ্রিয় মাহাত (১৪)। বাড়ি কেশিয়াড়ির পারুয়া গ্রামে। চলতি বছরের মার্চ মাসে কেশিয়াড়িতে হাতির হানায় মৃত্যু হয় এক স্কুল শিক্ষকের।ঘটনায় শিহরিত স্থানীয় বাসিন্দারা৷ উদ্বেগে রয়েছে বনদফতরও৷
গতকাল (শুক্রবার) কেশিয়াড়ির পাথরহুড়ির জঙ্গলে ৬০টি হাতির একটি দল সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে প্রবেশ করে। বিকেল হলে নেমে পড়ে লোকালয়ের ধান জমিতে। মশাল বাহিনী হাতিগুলিকে কলাইকুন্ডার দিকে পাঠানোর চেষ্টা করে। কিন্তু হাতি বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে ছড়িয়ে পড়ে জঙ্গলে। ফলে রাতভর হাতির পালকে সরাতে সক্ষম হয়নি মশাল বাহিনী। তবে পাথরহুড়ির জঙ্গল থেকে হাতির পাল পৌঁছে যায় হাতিগেড়িয়া এলাকার জঙ্গলে। হাতির পালের উপস্থিতির কথা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। সকাল থেকেই জঙ্গলে ভিড় করে অতি উৎসাহিত মানুষজন। শনিবার সকালে হাতি দেখতে গিয়ে এক যুবক আহত হন।
জানা গিয়েছে, জঙ্গলের ভেতরে হাতি দেখতে অন্যান্যদের সঙ্গেই প্রবেশ করেছিলেন ওই যুবক। সেই সময় একটি হাতি তাড়া করলে দৌড়ে পালাতে গিয়ে গাছে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায় ওই যুবক। পরে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা করায়। এই যাত্রায় রক্ষা পেয়েছিলেন ওই যুবক। তারপর বিকেলে মৃত্যুর ঘটনা ঘটলো ওই জঙ্গলেই অপর এক স্কুল ছাত্রের।
বনদপ্তর ও স্থানীয়রা জানান, ওই কিশোর অন্যান্যদের সঙ্গেই হাতি দেখতে গিয়েছিল। সেই সময় হাতির দলের মধ্যে থেকে একটি হাতি তাকে তাড়া করলে সে পড়ে যায়। সেই সময় হাতিটি শুঁড়ে ধরে আছাড় মারলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। খবর যায় বনদপ্তরে। বন দফতরের কর্মীরা আসার আগেই ওই জঙ্গল ছেড়ে সবাই পালিয়ে যায়। ফলে বনকর্মীরা এসে মৃতদেহ খুঁজে পায়ন। সন্ধেবেলা বিশাল মশাল বাহিনী নিয়ে জঙ্গলের ভেতরে প্রবেশ করে ওই ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধারে।
এক বনকর্মী জানান, দুর্ঘটনা ঘটার পর কয়েকজন ছবিও তুলেছেন মৃত ছাত্রের। তারপরে সবাই পালিয়ে গিয়েছে। কেউ না থাকায় আমরা আসার পর আর ঘটনাস্থল খুঁজে পাইনি। সেই কারণে দেহ খুঁজতে সময় লাগছে।
খড়্গপুর বন বিভাগের ডিএফও মণিশ যাদব বলেন, “একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। সকাল থেকেই বনকর্মীরা ওই এলাকায় মাইকিং করে জঙ্গলে প্রবেশ না করার বার্তা দিয়েছিলেন। হাতির দলটিকে অন্যত্র সরানোর চেষ্টা চলছে। মানুষজনকেও ওই জঙ্গলে প্রবেশ না করা এবং জঙ্গলপথ ব্যবহার না করার বার্তাও দেওয়া হচ্ছে।”