আশিস মণ্ডল, বোলপুর, ৯ এপ্রিল: ১৮ মাসের সন্তানকে গলা টিপে হত্যা করে আত্বহত্যার চেষ্টা মায়ের। যদিও আর্তনাদ শুনে ছুটে আসা প্রতিবেশীদের চেষ্টায় প্রাণে বেঁচেছেন মা। বোলপুরের রূপপুর অঞ্চলের হেদোডাঙা আদিবাসী মহল্লার এই ঘটনায় স্তম্ভিত সকলে। সদ্যোজাত সন্তানকে প্রাণে মেরে গৃহবধূর আত্মঘাতী হতে যাওয়ার পেছনে স্বামীর পরকীয়ায় কারণ হিসাবে উঠে এসেছে।
শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ খবর পেয়েই ঘটনাস্থল থেকে সন্তানের মা সুখদি টুডু ও বাবা সোনাই টুডু সহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে। আদিবাসী দম্পতি সোনাই টুডু (২৫) ও সুখদি টুডুর (২২) বছর চারেক আগে বিয়ে হয়েছিল। গ্রাম সূত্রে জানা গেছে, সোনাই টুডুর বিবাহের পূর্বে থেকেই অপর এক মহিলার সঙ্গে বিবাহ বহিভূত সম্পর্ক ছিল। এই ঘটনা জানাজানি হতে দাম্পত্য কলহ চরমে ওঠে সোনাই ও সুখুদির মধ্যে। শনিবার রাত ৮ টার সময় বাড়ি ফাঁকা থাকা অবস্থায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সুখুদি। তার আগে নিজের সন্তানকে গলা টিপে মেরে ফেলে বলে অভিযোগ। গৃহবধূর নিজের ঘরে শিশুটির নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়ার সময় গৃহবধূর আর্তনাদ শুনতে পান প্রতিবেশীরা। তারা ছুটে আসেন। গৃহবধূকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি ওই শিশুকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করে। গলায় দড়ি থাকা অবস্থায় কোনো রকমে প্রাণ বাঁচে মা সুখদি টুডুর। শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ খবর পেয়েই ঘটনাস্থল থেকে সদ্যোজাত মৃত পুত্র সন্তানের দেহ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। রবিবার স্বামী সোনাই টুডু ও স্ত্রী সুখদি টুডু সহ পরিবারে ৪ জনকে আটক করে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ।
প্রতিবেশী লক্ষ্মীরাম টুডু ও সুখী টুডু জানায়,”সোনাই টুডু ও সুখদি টুডুর সঙ্গে প্রায়ই অশান্তি হত।” অন্যদিকে সুখদি টুডুর পরিবারের দাবি, বিবাহের কিছুদিনের মধ্যেই যে মানুষ পরকীয়ায় লিপ্ত হয়, সে কেমন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সোনাই টুডুর চরম শাস্তি চাই। তবে গোটা ঘটনায় হতবাক আদিবাসী মহল্লা। দুধের শিশুর এহেন পরিণতিতে গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।