স্বরূপ দত্ত, উত্তর দিনাজপুর, ১৭ মে: করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে বেনারস থেকে ফিরে বাড়িতে না ঢুকে সকলের থেকে দূরে গ্রামেই একটি পুকুরের ধারে খোলা আকাশের নীচে একা রাত্রিবাস করে চলেছেন পরিযায়ী শ্রমিক রঞ্জিত বর্মন। উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ ব্লকের বরুয়া গ্রামপঞ্চায়েতের শিসগ্রামের এই পরিযায়ী শ্রমিক রঞ্জিত বর্মনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। ছ’মাস পর বেনারস থেকে ফিরে এসে পরিবারের সঙ্গে না থেকে সংক্রমণ প্রতিরোধে নিজেকে এভাবে আলাদা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রঞ্জিত বর্মন।
ছ’মাস আগে রাজমিস্ত্রীর কাজ নিয়ে বেনারস গিয়েছিলেন রায়গঞ্জ ব্লকের বরুয়া গ্রামপঞ্চায়েতের শিসগ্রামের বাসিন্দা রঞ্জিত বর্মন। মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে বাড়িতে ফেরার কথা তাঁর। কিন্তু করোনা ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে লক ডাউন। বাড়ি ফিরতে পারেননি রঞ্জিত। রাজ্য সরকারের সহায়তায় বিশেষ ট্রেনে চেপে বিহারের কাটিহার স্টেশনে নামেন তিনি। সেখান থেকে হেঁটে শসগ্রামে ফেরেন।
ছবি: ধূপকাঠি জ্বালিয়ে রাত জাগছেন রঞ্জিত বর্মন।
কিন্তু গ্রামে ফিরলেও লোকালয়ে বা বাড়িতে না ঢুকে গ্রামেরই এক কোনে একটি পুকুরের ধারে খোলা আকাশের নীচে চট পেতে রাত কাটাচ্ছেন রঞ্জিত। কারন একটাই করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে তাঁর এই সচেতনতা। সঙ্গী জলের বোতল আর মশা তাড়ানোর ধূপকাঠি। কারন হিসেবে জানালেন বাড়ি পরিবার আছে বলে নিজেই সচেতন হয়ে এখানে রাত কাটাচ্ছেন। যাতে পরিবার বা গ্রামের লোকজনের সাথে তাঁর সংযোগ না ঘটে। টাকার অভাবে মাথার ওপরে কোনও ছাউনি বা চারপাশটা ঘিরে নিতে পারেননি। এভাবেই ১৪ দিন কাটানোর পর করোনা টেস্ট করিয়ে পরিবারের কাছে ফিরতে চান রঞ্জিত বর্মন। তাঁর এই সচেতনতামূলক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন গ্রামের বাসিন্দারা।