আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ২২ মে: দায়িত্ব গ্রহণের চারদিনের মাথায় সরিয়ে দেওয়া হল বীরভূমের রামপুরহাট পুরসভার প্রশাসনিক বোর্ডের সদস্য তথা বিদায়ী বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান সুকান্ত সরকারকে। তাঁর জায়গায় নিয়ে আসা হল ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর মীনাক্ষী ভকতকে। এনিয়ে দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। ফেসবুকেও বিতর্ক শুরু করেছেন তৃণমূল নেতারা।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৭ মে রামপুরহাট পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়। পরের দিন রাজ্য সরকারের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের নির্দেশে প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারপার্সন হন বিদায়ী চেয়ারম্যান অশ্বিনী তেওয়ারি, সদস্য হন সুকান্ত সরকার। সেই মতো তাঁরা দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর থেকে ফের একটি সংশোধিত তালিকা এসে পৌঁছয় রামপুরহাট পুরসভায়। সেই তালিকায় সুকান্তবাবুর জায়গায় মীনাক্ষী ভকতকে প্রশাসনিক বোর্ডের সদস্য করা হয়। এনিয়ে সুকান্তবাবু বলেন, “দল প্রথমে আমাকে উপযুক্ত ভেবেছিল। পরে মীনাক্ষীকে উপযুক্ত ভেবেছে। এনিয়ে যা বলার দল বলবে”। যদিও এনিয়ে দলের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে সেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যানের স্বামী উজ্জ্বল ধীবর ফেসবুকে পোষ্ট করেছেন, “তৃণমূল দলটাকে শেষ করার ক্ষমতা কোনও দলের নেই। শেষ করার জন্য তৃণমূলই যথেষ্ট”। দলের অনেক কর্মী সমর্থক ওই পোষ্টের সমর্থনে মন্তব্য করেছেন।
বিদায়ী বিজেপি কাউন্সিলর, দলের জেলা সহসভাপতি শুভাশিস চৌধুরী বলেন, “সুকান্তবাবু রামপুরহাটে ওই দলের প্রতিষ্ঠাতা বলে জানি। তাঁর অভিজ্ঞতা রয়েছে যথেষ্ট। কিন্তু দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিতে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল। যার স্বামীর বিরুদ্ধে ১৯ লক্ষ টাকা তছরুপের একটি অডিও বক্তব্য নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল। বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে রামপুরহাট থানায় এবং জেলা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। দুর্নীতি ঢাকতেই প্রশাসনিক বোর্ডের সদস্য পরিবর্তন করা হল। দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে বেশ কিছু তৃণমূল কাউন্সিলর ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। দল চাইলে তাদের নেওয়া হবে”। এদিকে অডিও মন্তব্য নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছিল জেলা নেতৃত্ব। কিন্তু সেই তদন্ত রিপোর্ট আদৌ জেলায় জমা পরেছে কি না তা নিয়ে সন্দিহান দলের অনেকেই।