আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ২১ আগস্ট: বিপুল সংখ্যক তাজা বোমা উদ্ধারকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়ার মানিকপীর এলাকায়। শুক্রবার বিকেলে ভাটপাড়া পৌরসভার অন্তর্গত ১৪নং ওয়ার্ডের ১৬ নম্বর গলিতে মানিকপীর এলাকা থেকে মোট ৮০টি তাজা বোমা উদ্ধার করল ভাটপাড়া থানার পুলিশ।
শুক্রবার ভাটপাড়া থানার পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পায় মানিকপীর এলাকায় অসংখ্য বোমা লুকিয়ে রাখা হয়েছে। সেই খবর পেয়ে ভাটপাড়া থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী দুষ্কৃতীদের আখরা বলে পরিচিত মানিকপীর অঞ্চলে হানা দেয়। পুলিশি তল্লাশিতে মানিকপীর অঞ্চলের এক জনবহুল স্থানে লুকিয়ে রাখা প্রায় ৮০টি বোমা উদ্ধার করা হয়। বোমাগুলি উদ্ধার হওয়ার পর ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশের বোম স্কোয়াডের দল। পুলিশের বোম স্কোয়াডের সদস্যরা এসে ওই তাজা বোমাগুলিকে নিষ্ক্রিয় করে। প্রচুর সংখ্যক বোমা উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় ভাটপাড়ার মানিকপীর অঞ্চলে।
জনবহুল এলাকায় প্রকাশ্যে এই ভাবে শতাধিক বোমা উদ্ধারের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পরেন এলাকাবাসী। তাদের বক্তব্য, “আজ যে পরিমাণ বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ সেটা দেখে আমরা খুবই ভয়ে আছি। কারণ এই বোমাগুলি যদি কোনও ভাবে ফেটে যেত তাহলে গোটা এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হত। এমন কি প্রাণহানী হতে পারত। হয়ত আবার কোন ভাবে ভাটপাড়া অঞ্চলে দুষ্কৃতীরা গন্ডগোল করতে চাইছে।”
এই বোমা উদ্ধারের ঘটনার খবর পেয়েই ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং দাবি করেন, “সামনেই শুরু হচ্ছে উৎসবের মরশুম, গণেশ চতুর্থী, দুর্গা পুজো রয়েছে। আর এই উৎসবের মরশুমে গন্ডগোল বাধানোর চেষ্টা চালাচ্ছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। তারাই উৎসবের আমেজ নষ্ট করবার জন্য, দাঙ্গা করবার জন্য বোমা মজুত করছে। আর পুলিশ নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বোমা বানানোর মত দুষ্কৃতী কাজকর্মে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের সাহায্য করছে। মানিকপীর, নয়া বাজার সহ ভাটপাড়ার বিভিন্ন অঞ্চলে তল্লাশি চালালে আরো অনেক অনেক তাজা বোমা উদ্ধার করতে পারবে পুলিশ। কিন্তু সেটা হবে না, কারণ পুলিশের মদতে এই সব বোমা তৈরি হচ্ছে।”
তবে বিজিপি সাংসদের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল নেতা দেবজ্যোতি ঘোষ পাল্টা দাবি করেন, “বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এলাকায় দাঙ্গা বাধানোর জন্য বোমা মজুত করেছিল। আমরা পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই যে ওনারা যথা সময়ে বোমাগুলি উদ্ধার করে এলাকা অশান্ত হওয়া থেকে রক্ষা করেছেন।” বোমা উদ্ধারের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে ভাটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক রাজর্ষি দত্ত জানান, “হাত বোমা ও কৌটো বোমা মিলিয়ে ৮০টি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। বোমাগুলি নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িতদের খোঁজ চলছে। দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করা হবে ।” গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ভাটপাড়া থানার পুলিশ ।