আমাদের ভারত, ২৬ নভেম্বর: ২০৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার শতবর্ষ পূর্তি হবে। তার আগেই বিকশিত ভারত গড়া হবে। আর সেটা গড়ে উঠবে, রাম রাজত্বের অনুপ্রেরণায়। অযোধ্যার রাম মন্দিরের ধ্বজা উত্তোলন করে এমনটাই বললেন প্রধানমন্ত্রী।
মঙ্গলবার পুণ্য তিথি শুভ মুহূর্তে রাম রাজ্যের প্রতীক বিশালাকার পতাকার স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার মাধ্যমে উত্তোলন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সংঘ প্রধান মোহন ভাগবত, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, রাজ্যপাল আনন্দীবেন পাটেল।
অনুষ্ঠানে ধ্বজা উত্তোলনের পর ভাগবত, মোদী, যোগী বক্তব্য রাখেন। আবেগ তাড়িত হয়ে কাঁপতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীর হাত। মোদী বলেন, আজ গোটা পৃথিবী রামময়। কত শতাব্দীর ক্ষত আজ পূরণ হল। কত শতাব্দীর সংকল্প আজ পূর্ণতা পেল। ৫০০ বছরের যোজ্ঞ ও সাধনার ফল এই মন্দির। এত বছর ধরে সেই যোজ্ঞাগ্নী নেভানো হয়নি।
মোদীর কথায়, এই ধ্বজা কেবল ধ্বজা নয়, বরং ভারতীয় সভ্যতার নবজাগরণের প্রতীক। এই ধ্বজা সংকল্পের, সাফল্যের, সংঘর্ষে স্বপ্ন পূরণের ও ভেদাভেদ এবং পীড়া থেকে মুক্তির।
মোদী বলেন, রাম মন্দিরে এলে সকলে সপ্ত মণ্ডপমে আসবেন। এটি বিশ্বাস, বন্ধুত্ব এবং সামাজিক সম্প্রীতির বন্ধন আরো দৃঢ় করবে। আমাদের রাম ভেদাভেদ নয়, সদ্ভাবে প্রসন্ন হন। বংশ- কুল নয়, ভক্তিতে প্রসন্ন হন। আজ আমরাও এই ভাবনা নিয়েই এগোচ্ছি। গত ১১ বছরে নারীর, দলিত, আদিবাসী, বঞ্চিত, কৃষক, যুবক সব বর্গকে উন্নয়নের কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। একদিন দেশের সব ক্ষেত্রে সব মানুষের উন্নয়ন হবেই। সেই দিন বেশি দূর নয়। এর জন্য সকলে সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন। আমরা এমন সমাজ গড়ব যেখানে কোনো দারিদ্র্য, দুঃখ থাকবে না।
আগামী ২০৪৭ সালের মধ্যে এই বিকশিত ভারত গড়ার কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন মোদী। ইঙ্গিত দিয়েছেন সেই দেশ গড়া হবে রাম রাজ্যের অনুপ্রেরণায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের দিনে অযোধ্যা মানবতার বিকাশের মডেল হয়ে উঠেছে। কোটি কোটি মানুষ এই পূর্ণভূমিতে এসেছেন। স্থানীয়দের আয় বেড়েছে। রামভূমি থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে ভারত খুব শীঘ্রই পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠবে।
রাম মন্দিরের সদ্য স্থাপিত পতাকাটি ১০ ফুট উঁচু এবং কুড়ি ফুট দীর্ঘ। এই গেরুয়া পতাকায় সূর্য ওঁম চিহ্ন এবং দেব কাঞ্চন গাছের প্রতীক রয়েছে। অতীতে এই প্রতীকগুলি সূর্য বংশের পতাকায় ব্যবহার করা হতো। মেবারের রামায়নের একটি চিত্র নিয়ে গবেষণার সময় ওই পতাকার খোঁজ পান ভারততত্ত্ববিদ ললিত মিশ্র। সেই আদল অনুসরণ করে রাম মন্দিরের পতাকাটি তৈরি করা হয়েছে।
মন্দিরের শিখরে চূড়ায় ৪২ ফুট দীর্ঘ দন্ডের উপর বসানো হয়েছে ওই পতাকা। তিন কিলোমিটার দূর থেকেও তা দেখা যাবে। মঙ্গলবার পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে রাম মন্দিরে নির্মাণ কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্দির কমিটি।

