কালিয়াগঞ্জের কিশোরী ও মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের বাড়ি গেলেন ভারত সেবাশ্রম সংঘের সন্ন্যাসীদের প্রতিনিধি দল

স্বরূপ দত্ত, উত্তর দিনাজপুর, ৬ মে: জাতীয় তপশিলি জাতি কমিশনের পর এবার কালিয়াগঞ্জের মৃত নাবালিকা ও নিহত মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের বাড়িতে গেলেন ভারত সেবাশ্রম সংঘের সন্ন্যাসীদের প্রতিনিধি দল। শনিবার সন্ন্যাসীরা প্রথমে যান গাঙ্গুয়া এলাকায় মৃত দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীর বাড়িতে। সেখান থেকে রাধিকাপুরের চাঁদগা গ্রামে যান তারা। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের পরিবারের কারোরই দেখা পাননি সন্ন্যাসীরা।

উল্লেখ্য গত ২১ শে এপ্রিল পালোইবাড়ি এলাকার পুকুর পাড় থেকে ওই নাবালিকার মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয় কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটা এলাকা। এরপর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় থানাতে৷ আক্রান্ত হয় পুলিশও। ঘটনায় গত ২৭ শে এপ্রিল রাত ২ টো নাগাদ ওই এলাকায় তল্লাশি অভিযানে যায় পুলিশ। সেই সময় ধরপাকড়ে বাধা দিলে মৃত্যুঞ্জয় বর্মন নামে এক রাজবংশী যুবককে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে বলে অভিযোগ ওঠে৷ এই ঘটনায় বিজেপির ডাকে ১২ ঘন্টার বনধও পালিত হয়। শুক্রবার গ্রামে গিয়েছিলেন জাতীয় এস সি কমিশনের চেয়ারপার্সন অরুণ হালদার।

রবিবার স্বামী প্রদীপ্তানন্দজী মহারাজের নেতৃত্বে সন্ন্যাসী দলের সদস্যরা গ্রামে গিয়ে মৃত নাবালিকার বাড়িতে যান। সেখানে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন। আশ্বাস দেন পাশে থাকার। পরে কিশোরীর সমাধিস্থলে যান সন্ন্যাসীরা৷

সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে স্বামী প্রদীপ্তানন্দজী মহারাজ বলেন, ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রণবানন্দজী মহারাজ প্রথম জীবনে সমাজের পিছিয়ে পড়া আদিবাসী, বনবাসী, রাজবংশীদের উন্নয়নে অনেক কাজ করেছেন। বর্তমানে রাজবংশী ও আদিবাসী সমাজের হাজার দুয়েক ছেলেমেয়ে তাদের আশ্রমে পড়াশোনা করে। আমরা সমাজের কল্যাণের জন্য সন্ন্যাসী হয়েছি। সমাজের আজ চরম দুর্দিন। এমতাবস্থায় তাদের চরম দুর্দিনে সন্ন্যাসীরা ঘরে বসে থাকতে পারেন না। মর্মান্তিক এই দুই ঘটনা জানা মাত্রই ভারত সেবাশ্রম সংঘের কলকাতার সদর কার্যালয়ের সম্পাদক তাদের গ্রামে যেতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

কিন্তু বিলম্বে হলেও এদিন দুই দিনাজপুরের ভারত সেবাশ্রম সংঘের সমস্ত মহারাজরা এদিন গ্রামে পরিদর্শনে আসেন। কিন্তু ১৪৪ ধারা জারি থাকায় বেশি সংখ্যায় সন্ন্যাসী গ্রামে আসতে পারেননি। গোটা বিষয়টি ভারত সেবাশ্রম সংঘের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে বলে জানান তারা। যদিও এদিন নিহত মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের বাড়িতে গেলেও কারোরই দেখা পাননি তাঁরা। কারণ তারা রখনও ভয়ে বাড়ি ছাড়া। প্রদীপ্তানন্দ মহারাজ জানান, মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের সন্তানের পড়াশোনার সমস্ত খরচ ভারত সেবাশ্রম সংঘ বহন করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *