Sukanta, BJP, রাজ্যে কালো অধ্যায় চলছে: সুকান্ত

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ৬ নভেম্বর: “সব রাজ্য কালো অধ্যায় থেকে বেড়িয়ে গিয়েছে। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ বাকি আছে। কারণ পশ্চিমবঙ্গে এমন একটা শক্তি কাজ করছে বা বিরাজ করছে তারা যতদিন থাকবে ততদিন পর্যন্ত কালো অধ্যায় থাকবে।” বৃহস্পতিবার বন্দে মাতরম- এর ১৫০ সার্ধ শতবর্ষ গৌরব যাত্রার সূচনা করতে রামপুরহাটে আসার আগে বোলপুরে সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূলকে এভাবেই কটাক্ষ করেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।

সুকান্তবাবু বলেন, “বিহারে প্রথম দফার নির্বাচন চলছে। বিহার নির্বাচনে কোনও গোলমাল হয়নি। ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। লালু প্রসাদের সময়ে ব্যাপক হিংসা হত। বিহার সেই অন্ধকার অধ্যায় পেরিয়ে গেছে। কিন্তু বাংলায়, সেই অন্ধকার অধ্যায় এখনও অব্যাহত রয়েছে। আমরা স্কুলে যখন পড়তাম তখন বিহারের কালো দিনের কথা শুনতাম। এখন পশ্চিমবঙ্গে দেখছি।”

বাংলায় SIR (সিস্টেমেটিক ইনফরমেশন রিভিশন) পরিস্থিতি সম্পর্কে, যেখানে তৃণমূল কংগ্রেস এবং কংগ্রেস দাবি করেছে যে এখনও পর্যন্ত সাতজন ভয়ে মারা গেছেন, সেই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “এসআইআর প্রক্রিয়াটি বিজেপি পরিচালনা করছে না। এটি নির্বাচন কমিশন পরিচালনা করছে। প্রক্রিয়াটি আরও ১২টি রাজ্যেও চলছে। কিন্তু সেখানে কেউ মারা যাচ্ছে না। কেন কেবল বাংলায় মৃত্যু ঘটছে? নির্বাচন কমিশন জানে কীভাবে কাজ করতে হয়। তৃণমূল ভয় দেখাচ্ছে এবং সম্ভাব্য সকল উপায়ে BLO (বুথ লেভেল অফিসার) কে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। BLO- কে রাতে দলীয় অফিসে আসতে বাধ্য করা হচ্ছে, এবং সেখান থেকে ফর্ম বিতরণ করা হচ্ছে। বিএলও-র সঙ্গে তৃণমূল ঝাণ্ডা নিয়ে ঘুরছে। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী নিজেও BLO- কে হুমকি দিচ্ছেন। মাঝে মাঝে, আমি বলতে পারি না যে তিনি মুখ্যমন্ত্রী নাকি গুন্ডা।”

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সংবাদ সম্মেলন – যেখানে গান্ধী দাবি করেছিলেন যে “ব্রাজিলিয়ান মডেল” ভারতে একাধিকবার ভোট দিয়েছেন- এই সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “এটি অবশ্যই একটি কেরানির ভুল ছিল। সরকারি কর্মচারীরা এই প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করেন। এর আগে, ওসামা বিন লাদেনের ছবি বাংলার ভোটার তালিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। রাহুল গান্ধীর স্থল বাস্তবতা সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই। তিনি কখনও তার ঘর থেকে বের হন না। তিনি একজন ‘এসি বয়’। যারা আসলে বাইরে যান, সূর্যের নীচে হাঁটেন এবং মাটিতে মানুষের সাথে দেখা করেন তারা সত্য জানেন।”

নদিয়া জেলায় তার কনভয়ের উপর সাম্প্রতিক হামলার বিষয়ে সুকান্তবাবু বলেন, “এই ঘটনাগুলি ঘটে। কিন্তু আমরা কিছুটা ট্রেলার দিয়েছি। এখন দেখা যাক এরপর কী হয়। যদি কেউ আবার বিজেপি কর্মীদের আক্রমণ করে, আমরা চুপ করে থাকব না। প্রতিটি রক্তের ফোঁটার হিসাব নেওয়া হবে।”

এদিন বিকেলে রামপুরহাট পুরসভার মাঠ থেকে বিজেপির গৌরব যাত্রা শুরু হয়। শেষ হয় কামারপট্টি মোড়ে পথসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ১৭ টি এনুমারেশন ফর্ম গিয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বলছেন তিনি নিজে হাতে ফর্ম নেননি। তিনি ফর্ম ফিলাপ করবেন না। যতক্ষণ না বাংলা সব মানুষ ফর্ম ফিলাপ করবে। নিউটাউনে একটি বস্তি ফাঁকা করে সকলে বাংলাদেশ পালিয়েছে। আপনি যদি এককথার মানুষ হন তাহলে আপনিও ফর্ম ফিলাপ করবেন না। আপনার ভোটার লিস্টে নাম থাকবে না।

রামপুরহাটের বিধায়ক তথা ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, “তৃণমূলের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ফ্লেক্সে মমতার পাশাপাশি ভাইপো অভিষেকেরও ছবি দিয়েছেন। এটা সাধারণত বর্ষীয়ান বিধায়ক্রা করেন না। কিন্তু এখানে শুনলাম চভবি আছে কলকাতার ভাইপোর কিন্তু নাম রয়েছে বিধায়কের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। একাহ্নকার লোক বলছেন মাস্টার মশাইয়ের হয়ে সেই সব চুরি করে। মাস্টার মশাই সাধু লোক। বিধায়ক একজন মাস্টার মশাই ছিলেন। তাই তিনি নিজে চুরি করবেন না। ভাইপোকে দাঁড় করিয়ে চুরি করাচ্ছেন। কয়লা, বালি, পাথর সব চুরি করাচ্ছেন ভাইপোকে দিয়ে। এই মাস্টার মশাইকে আর আপনারা রাখতে চান? আমি কথা দিয়ে যাচ্ছি রামপুরহাটে এবার আমরা এমন প্রার্থী দেব যিনি মাস্টার মশাইয়ের রাতের ঘুম উড়িয়ে দেবেন।“

এস আই আর প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “বাংলার মুসলিমরা বিজেপিকে ভোট দেয় না। কিন্তু কথা দিচ্ছি যারা ভারতীয় সেই সমস্ত মুসলিমদের যাতে একটি নামও বাদ না যায় তার দায়িত্ব নেবে বিজেপি”। অনুব্রত মণ্ডল এবং কাজল শেখকে ষাঁড়ের সঙ্গে তুলনা করে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “অনুব্রত মণ্ডল বলছেন এস আই আর হোক। ভালো কাজ। আর আরেক ষাঁড় কাজল শেখ এস আই আরের বিরোধিতা করছে। কাজল শেখ এবং করিম শেখ নানুরে আমাদের হিন্দুদের বেছে বেছে ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেছে। হিন্দু মহিলাদের ইজ্জত নিয়েছে। আমরা কাজল শেখকে ছেড়ে দেব না। ঠিক সময় পাকিং করে ঠিক জায়গায় পাঠিয়ে দেব। আর দিদি এখন কাজল শেখদের হাতে বীরভূমকে তুলে দিয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *