আমাদের ভারত, সিউড়ি, ১৫ ফেব্রুয়ারি: মিড-ডে মিলের অর্থ ও চাল আত্মসাতের অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন বিডিও। অভিযোগ দায়ের করার খবর পেয়েই স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রভাত ঘোষ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যান। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের মুরারই ১ নম্বর ব্লকের মহুরাপুর হাইস্কুলে।
জানা গিয়েছে, মহুরাপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন থেকে মিড-ডে মিলের অর্থ এবং চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠছিল। বিভিন্ন সূত্রে খবর পেয়ে বিডিও একটি কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু করান। ওই কমিটি তিন বছরের খাতাপত্র পরীক্ষা করে গড়মিল ধরে ফেলেন। তদন্তে ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ৩২০ টাকার গড়মিল ধরা পড়ে। এছাড়া ৩২০৮ কেজি চালের গড়মিল লক্ষ্য করে কমিটি। তদন্ত কমিটি জানতে পারে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে ৮৭৫ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। তার ৮০ শতাংশ খাবার সরকারিভাবে বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু স্কুলের হাজিরা খাতার সঙ্গে মিড-ডে মিলের খাতার বিস্তর ফারাক রয়েছে। একই ভাবে ছাত্রছাত্রী পিছু দেড়শো গ্রাম করে চাল বরাদ্দ করা হয়। সেই চালও বেশি হাজিরা দেখিয়ে টাকা তুলে নিয়েছে। এরপরেই সমস্ত খাতাপত্র বাজেয়াপ্ত করার পর প্রধান শিক্ষককে শো-কজ করা হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক যে উত্তর দিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট করতে পারেনি তরন্তকারি কমিটিকে। এরপরেই বিডিও শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে টাকা ও চাল আত্মসাতের অভিযোগ দায়ের করেন।
বিডিও নিশীথ ভাস্কর পাল বলেন, “বেশ কয়েকটি স্কুলে মিড-ডে মিলের দুর্নীতি উঠে আসছে। সেই মতো মহুরাপুর হাইস্কুলে তদন্ত শুরু করা হয়। তদন্তে আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। প্রধান শিক্ষককে শো-কজ করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি। ফলে আমরা থানায় অভিযোগ জানাতে বাধ্য হয়েছি। একই সঙ্গে বিষয়টি জেলা শাসক ও মহকুমা শাসককে জানানো হয়েছে। আরও কয়েকটি স্কুল আমাদের নজরে রয়েছে। সেই সমস্ত স্কুলেও তদন্ত শুরু করা হবে”।
মহুরাপুর স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি বিনয় ঘোষ বলেন, “বিডিও সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। ছাত্রছাত্রীদের জন্য বরাদ্দ অর্থ আত্মসাৎ মেনে নেওয়া যায় না। অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি হওয়া উচিত। বিডিওর এই পদক্ষেপের ফলে অন্য স্কুলের শিক্ষকরাও সচেতন হবে”।
প্রধান শিক্ষকের মোবাইলে ফোন করা হলে জানানো হয়, তিনি অসুস্থ। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।