স্নেহাশীষ মুখার্জী, আমাদের ভারত, নদিয়া, ১১ জুলাই: জামিন পাইয়ে দেওয়ার জন্য শান্তিপুর থানার এক পুলিশ অফিসারের নাম করে এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠল এক মুহুরির বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় গত শনিবার রাতে শান্তিপুর থানার দ্বারস্থ হন অভিযোগকারী মহিলা প্রতিমা দাস। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শান্তিপুর থানার পুলিশ।
জানা গেছে, শান্তিপুরের বাসিন্দা মোহনদাস সহ কয়েকজনকে ডাকাতির মামলায় গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তার স্ত্রী প্রতিমা দাস জামিনের ব্যবস্থা করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ছোটাছুটি করছিলেন। সেই সময় শান্তিপুরের মুহুরি পিন্টু চন্দর সাথে যোগাযোগ করেন তিনি। অভিযোগ, এরপর মোহনদাসকে ছাড়িয়ে আনবে বলে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দাবি করে পিন্টু চন্দ। তারপরও জামিন করার জন্য শান্তিপুর থানার এক পুলিশ অফিসারের নাম করে প্রায় ২০ হাজার টাকা নেয়। পরে প্রতিমা থানায় গিয়ে জানতে পারে পুলিশ এরকম কোনও টাকা চায়নি। যদিও মোহনদাস জেল হেফাজত থেকে রেহাই পায়নি। পরবর্তীতে অন্য উকিল ধরে জেল হেফাজত থেকে রেহাই পায় মোহনদাস।
মোহনদাসের স্ত্রী মুহুরি পিন্টু চন্দর কাছে টাকা চাইতে গেলে হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। প্রতিমার দাবি, পিন্টু চন্দ নামে ঐ মুহুরি তাকে বলেছিল, “পুলিশকে টাকা দিতে হবে না হলে অনেক বড় কেস দেবে। কিন্তু আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি পুলিশ এরকম কোনও টাকা চায়নি।”
গত শনিবার রাতে শান্তিপুর থানার দ্বারস্থ হয় অভিযোগকারী মহিলা প্রতিমা দাস। ওই মুহুরি পিন্টু চন্দের নামে শান্তিপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
মুহুরি পিন্টু চন্দ বলেন, “আমার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। ওর স্বামী আমার কাছ থেকে জমি কেনার জন্য দেড় লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিল, সেই টাকা আমি পাই। আর মামলার জন্য কিছু টাকা ওরা দিয়েছিল।”
প্রতিমার দাবি, পিন্টু কোনওদিনই তাদের পূর্ব পরিচিত ছিল না। টাকা ধার নেওয়ারও কোনও প্রশ্ন নেই। অপরাধ ঢাকতে এখন মিথ্যা সাফাই দিচ্ছে।”
তবে এই ঘটনায় শান্তিপুরের সমস্ত মুহুরিদের মধ্যে শোরগোল পড়ে গেছে। তাদের দাবি, একই পেশায় থেকে যদি এই ধরনের কেউ প্রতারণা করে তাহলে তার অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত। অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে শান্তিপুর থানার পুলিশ।
এ প্রসঙ্গে রানাঘাট মহকুমা আদালতের লারর্নেড অ্যাডিশনাল পিপি অপূর্ব কুমার ভদ্র বলেন, “যদি এরকম কোনও ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে তার তদন্ত হওয়া উচিত। সঠিক বিচার পাওয়া উচিত। তদন্ত চলুক। এর দায়িত্ব থানাকে নিতে হবে, কারণ থানার নাম করে যেহেতু এই মুহুরি টাকা নিয়েছে। আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়।”

