আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, বীরভূম, ২১ অক্টোবর: ফের বিস্ফোরণে উড়ে গেল আস্ত একটি দাতাব্য চিকিৎসালয়। বিস্ফোরণের তীব্রতায় চিকিৎসালয়ের দরজা, জানালা কয়েকফুট দূরে গিয়ে পড়েছে। গভীর রাতে এই বিস্ফোরণে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা মজুত বোমা থেকেই এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। তবে কারা বোমা মজুত করল তার তদন্ত করছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের দুবরাজপুর থানার হেতমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চম্পানগরী গ্রামে।
২০০৮ সালে গ্রামের মানুষের দানের জায়গায় পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় গড়ে তোলা হয়। সেখানে দুটি ঘর নির্মাণ করা হয়। একটি ঘরে চিকিৎসকরা বসতেন। অন্য ঘরে রোগী ও তাদের আত্মীয়দের লোকজন বসতেন। লকডাউনের পর থেকে ওই দাতব্য চিকিৎসালয়ে আসা বন্ধ করে দেন চিকিৎসকরা। ফলে চিকিৎসকের ঘর ছিল বন্ধ। অন্য ঘরের চাবি থাকত শেখ হানিফের কাছে। ফলে ভিতরে বোমা মজুত থাকলে তার সঙ্গে হানিফ যুক্ত থাকতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দেড়েক আগে ক্ষমতা প্রদর্শনের নামে গ্রামের তৃণমূল নেতা আলিম মোল্লার সঙ্গে পাশের গ্রাম রসুলপুরের বাবলু শেখ ওরফে কায়ুমের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয়। তারা নিজেদের মধ্যে বোমাবাজি করে এলাকাকে সন্ত্রস্ত করে তুলেছিল। বেশ কয়েজন জখম হয়েছিলেন। গ্রেফতার হয়েছিলেন দুই তৃণমূল নেতাই। দাতব্য চিকিৎসালয়ের যিনি চাবি রাখতেন সেই হানিফের ঘনিষ্ঠ। ফলে পুলিশের সন্দেহের তালিকায় তিনিও রয়েছেন। যদিও বাবলু বলেন, “তিনি অন্য গ্রামে থাকেন। অহেতুক আমাকে এবিষয়ে জড়ানো হচ্ছে। আমি সাতেপাঁচে থাকি না”।
স্থানীয় বাসিন্দা জিল্লু রহমান বলেন, “দাতাব্য চিকিৎসালয়ের পাশেই আমার পুকুর। বোমার শব্দ শুনে ভাবলাম কেউ বোমা ফাটিয়ে পুকুরে মাছ ধরছে। গিয়ে দেখি দাতব্য চিকিৎসালয়ের অর্ধেক অংশ উড়ে গিয়েছে। এরপর কাউকে না বলে বাড়িতে এসে শুয়ে পড়ি”।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান দুবরাজপুর থানার পুলিশ। দুর্গাপুর থেকে বোমা বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে।