সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৫ জুলাই: এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই ফের বজ্রপাতে একই দিনে ৯জনের মৃত্যু হয়েছে বাঁকুড়াজুড়ে। এই ঘটনায় জেলাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
গত ১৮জুলাই বজ্রপাতে দু’জনের মৃত্যু হয়। মেজিয়ার ডাং মেজিয়ায় চাষের কাজ করার সময় বজ্রপাতে মারা যায় অজিত মাঝি, বেনাবাইদ গ্রামের বাউল মন্ডলের মৃত্যু হয় বজ্রপাতে। ঐদিনই গঙ্গাজলঘাঁটিতে এক স্কুল সংলগ্ন এলাকায় বাজ পড়লে স্কুলের ৫জন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গতকাল পৃথক ভাবে জেলার বিভিন্ন এলাকায় ৯জনের মৃত্যু হয় বজ্রপাতে। আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন।
শুক্রবার দুপুরে আকাশ কালো করে প্রবল বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হয় বাঁকুড়ায়। এতে ওন্দা, কোতুলপুর, জয়পুর, ইন্দাস ও পাত্রসায়ের থানা এলাকায় বজ্রপাতে মোট ৯জনের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছেন চার জন। সব থেকে বেশি মৃত্যু ঘটেছে ওন্দা ব্লকে। ওন্দাতে এদিন বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে চারজনের। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, ওন্দার কামারকাটা এলাকার নারায়ণ সর (৪৮), কল্যাণীর রামকৃষ্ণপুরে তিলকা মাল (৪৯)নামের এক মহিলার এবং মাকড়কোন্দা ভাদুলডাঙ্গা গ্রামের জবা বাউরী (৩৮) নামের আর এক মহিলার মৃত্যু হয়। ওন্দার ছাগুলিয়ায় আরও এক মহিলা প্রতিমা রায়(৩২)- এর মৃত্যু হয়েছে।
ইন্দাস থানার বাঙালচক এলাকায় মৃত্যু হয়েছে শেখ ইসমাইল মন্ডল (৬০)। এখানে আহত হয়েছেন বুলটি বাগদী নামের এক মহিলা।কোতুলপুর থানার খিরি গ্রামের বাসিন্দা জিয়াউল হক মোল্লা (৫০) মারা যান এবং গুরুতর আহত হন আসপিয়া মোল্লা। বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের থানার কাঁটাবন উদয়পল্লী স্কুল সংলগ্ন এলাকায় মারা যান জীবন ঘোষ (২০)। জয়পুর ব্লকের খড়িকাশুলি গ্রামে মৃত্যু হয় উত্তম ভুঁইঞার(৩৮)। বিষ্ণুপুরের বৈকুন্ঠপুরে মারা যায় মদন বাগদি।
জেলাজুড়ে পুরোদমে চলছে চাষাবাদ। এই সময় জমিতে কাজে ব্যস্ত চাষিরা। চাষের কাজে পুরুষদের পাশাপাশি অনেক মহিলাও কাজ করে।আচমকা বৃষ্টি এবং বজ্রপাত শুরু হতেই নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছনোর আগেই ঘটে যায় বিপত্তি বলে চাষের কাজে ব্যস্ত মানুষজনের বক্তব্য। এদিকে প্রশাসন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে বজ্রপাতের সময় খোলা আকাশের নিচে, গাছের তলায় আশ্রয় না নিয়ে বাড়ি বা বড় ছাউনির নীচে আশ্রয় নেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে প্রচার চালানো হচ্ছে।