রাজেন রায়, কলকাতা, ১১ সেপ্টেম্বর: লঙ্কর লিঙ্কম্যান বঙ্গকন্যা তানিয়া পারভিনের বিরুদ্ধে শেষপর্যন্ত ১৭৪ দিনের মধ্যে কলকাতা স্পেশাল এনআইএ কোর্টে ৭৫০ পাতার চার্জশিট পেশ করল এনআইএ। বৃহস্পতিবার দুপুরে পেশ করা এই চার্জশিটে ইউএপিএ (আনলফুল অ্যাক্টিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্ট, দেশদ্রোহিতা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারার উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও এনআইএ ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২১এ, ১২৪এ, ১২০বি (রাষ্ট্রদ্রোহ এবং ষড়যন্ত্র)-সহ সন্ত্রাস দমন আইন ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের একাধিক ধারায় অভিযুক্ত করেছে তানিয়াকে। উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া থেকে কিভাবে এই তরুণী লস্কর-ই-তৈবা এবং তাদের পাকিস্তানের নেটওয়ার্কের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলত তা সবিস্তারে উল্লেখ করা হয়েছে এই চার্জশিটে। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মার্চ মাসেই উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া থেকে জঙ্গিযোগ সন্দেহে স্নাতকের ছাত্রী তানিয়া পারভিনকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স। ১৪ দিনের মধ্যেই মামলাটির তদন্তভার নেয় এনআইএ। তাকে সঙ্গে করেই তার বাড়িতে তল্লাশি চালায় এনআইএ গোয়েন্দারা। পারভিনের বসিরহাটের বাড়ি থেকে অনেক নথি উদ্ধার হয়, সেগুলি পুরোটাই ডিজিট্যাল ফর্মে ছিল। জানা যায়, নতুন সদস্য বাছাই করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তানিয়াকে। লস্কর ই তৈবার এক সদস্যের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল তানিয়ার। গোয়েন্দাদের সন্দেহ ছিল, দেশে বড়রকম নাশকতার ছক কষেছিল লস্কর ই তৈবা। সেক্ষেত্রে তানিয়াকে কাজে লাগাতে চেয়েছিল তারা।
তানিয়াকে জেরা করে উঠে আসে বহু গোপন তথ্য। পাকিস্তানের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবা থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় গ্রুপ তৈরি করে প্রায়
৫০টি গ্রুপে তার মতো তরুণ প্রজন্মকে জেহাদের আদর্শে অনুপ্রাণিত করত। আর সবটাই তানিয়া বাদুড়িয়ায় নিজের বাড়িতে বসেই করত। তার বদলে মোটা টাকা চলে আসত তার অ্যাকাউন্টে। এক সাধারণ কলেজ ছাত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অত পরিমাণ টাকা দেখেই সন্দেহ হয়েছিল গোয়েন্দাদের। কিভাবে তানিয়া লস্কর তৈবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখত, কিভাবে তাদের নির্দেশে এখানে কাজ চালাত, এমনকি কিভাবে সে পাকিস্তানে যাওয়ার ছক কষেছিল তার সমস্ত তাই এই চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনআইএ আইনজীবী শ্যামল ঘোষ।