আমাদের ভারত, ২৬ ডিসেম্বর: এসআইআর নিয়ে তৃণমূল- বিজেপির তরজার অন্ত নেই। আজ আরামবাগের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের হুঙ্কার, এসআইআর- এ ভবানীপুর কেন্দ্রে ৪৫ হাজার নাম বাদ যাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী পালাবেন ভাবছেন, কিন্তু তিনি যেখানেই যান বিজেপি তাকে হারাবেই।
এসআইআর- এর প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ১৯৫১ সালে দেশে প্রথম জনগণনা হয়েছিল, তাতে ৮৪ শতাংশ হিন্দু ছিল, ৯.৮ শতাংশ মুসলিম ও বাকি অন্যান্য ধর্মের মানুষ বসবাস করতেন। তার কুড়ি বছর পর জনগণনায় দেখা গেল, হিন্দুর সংখ্যা ৮২ শতাংশ অর্থাৎ দুই শতাংশ কমেছে। মুসলিম জনসংখ্যা ১২.১২ অর্থাৎ তিন শতাংশ বেড়েছে। আবার ২০১১- তে জনগণনায় দেখা গেল, হিন্দুর সংখ্যা হয়েছে ৭৯ শতাংশ, অর্থাৎ আরো তিন শতাংশ কমেছে, আর মুসলিম জনসংখ্যা হলো ১৪.২ শতাংশ, অর্থাৎ দুই শতাংশের বেশি বেড়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে এরা সকলেই কি এদেশে জন্মেছেন, নাকি অন্য দেশ থেকে অনুপ্রবেশ করেছে।
সুকান্ত মজুমদার জানান, এসআইআর- এর ফলে ভবানীপুর থেকে ৪৫ হাজার নাম বাদ গেছে। সেই জন্যেই এতো চিন্তা তৃণমূলের। দিদি এবার ভাবছেন, ভবানীপুর ছেড়ে কোথায় পালাবেন। এরপরই সুকান্ত মজুমদার হুঙ্কার দিয়ে বলেন, যেখানেই যান, বিজেপি আপনার বিরুদ্ধে প্রার্থী দাঁড় করিয়ে আপনাকে হারাবে, এবং অবসরের ব্যবস্থা করবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন রাজ্যে কর্মসংস্থান করেছেন। আর যারা চাকরি পাননি তাদের স্ত্রীদের লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকায় বাসস্ট্যান্ডে, স্টেশনে ঘুগনি বিক্রির পরামর্শ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে সুকান্ত মজুমদার বলেন, আমার আপনার বাড়ির ছেলেরা ঘুগনি বিক্রি করবে, আর আপনার ভাইপো কয়লা বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা রোজগার করবে, এটা হতে পারে না।
মুখ্যমন্ত্রীর দু’ কোটি চাকরি দেওয়ার দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাত জনের মধ্যে দু’জন চাকরি পেয়েছে কিনা খোঁজ নিয়ে দেখুন, কারণ পশ্চিমবঙ্গের সাত কোটি ভোটার, তার মধ্যে ২ কোটি চাকরি পাওয়ার যে দাবি মুখ্যমন্ত্রী করেছেন তাতে ৭ জনে দু’জনের চাকরি পাওয়ার কথা। আপনারা জানেন কেউ চাকরি পায়নি, কেউ বড়লোক হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর লোকেরাই একমাত্র বড়লোক হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের রাজ্য থেকে ৬০ লক্ষ বেকার যুবক-যুবতী অন্য রাজ্যে কাজের খোঁজে যাচ্ছে।পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, রাজ্যে ভারতীয় জনতা পার্টি ক্ষমতায় এলে প্রতিবছর এসএসসি হবে। আপনাদেরকে পরীক্ষা হলে ওএমআর শিট ফেরত দেওয়া হবে, যাতে আপনি দেখতে পারেন আপনার নম্বর ঠিক আছে কিনা। সরকারি কর্মচারীদের কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
একই সঙ্গে নারী সুরক্ষার ইস্যুতে তিনি বলেন, ক্ষমতায় এলে পশ্চিমবঙ্গকে মা- বোনেদের জন্য সুরক্ষিত করব। যদি আরজিকর হয় তাহলে আমাদের থানার সামনে গাড়ি থাকবে না বুলডোজার থাকবে। আরজিকর- এর মত ঘটনা যারা ঘটাবে, তাদের বাড়ির উপরে বুলডোজার চলবে।

