Migrant worker, Kiranahar, সিলিন্ডার ফেটে চেন্নাইয়ে মৃ*ত কীর্ণাহারের ২ পরিযায়ী শ্রমিক

আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, বীরভূম, ৮ নভেম্বর: চা করতে গিয়ে গ্যাসের সিলিন্ডার ফেটে মৃত্যু হলো দুই পরিযায়ী শ্রমিকের। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম ইউসুফ শেখ (২৬) এবং বাবু শেখ (২৫)। দু’জনেরই বাড়ি কীর্ণাহারের পাটনীল গ্রামে। তাঁরা দু’জনেই চেন্নাইয়ের কপ্পুর গ্রামে একটি প্যাকিং কারখানায় কাজ করতেন। থাকতেনও একই ঘরে। শুক্রবার তাঁরা গ্যাস জ্বালিয়ে চা করছিলেন। সেই সময় সিলিন্ডার ফেটে দু’জনেই মারাত্মক ভাবে জখম হন। তাঁদের ভর্তি করানো হয় কে এম সি হাসপাতালে, সেখানেই শুক্রবার রাতে দু’জনের মৃত্যু হয়।

সেই খবর গ্রামে এসে পৌঁছতেই নেমে আসে শোকের ছায়া। দু’জনেই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন। বাবু শেখের বাড়িতে বাবা- মা, স্ত্রী, বছর পাঁচেকের ছেলে আর দুই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন বোন রয়েছেন। ইউসুফেরও বাবা – মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। বাবু শেখের মা লালবানু এবং ইউসুফের মা ইসরা বিবি বলেন, ২৭ দিন আগে দু’জনে বাড়ি থেকে গিয়েছিল। আর ৬ দিন পরে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। তার আগেই ওদের সিলিন্ডার ফেটে আহত হওয়ার দু:সংবাদ আসে। ওখানে আরও যারা আছে তাদের কাছে রোজ খবর নিতাম। ওরা বলতো ভালো আছে। সেইকথা শুনে আশায় বুকে বেঁধেছিলাম, সব শেষ হয়ে গেল।’

চেন্নাইয়ে রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন বাবুর মামা রকেট শেখ। তিনি বলেন, ‘ওদের সারা শরীর ভয়ানক ভাবে পুড়ে গিয়েছে। দেখেই বোঝা গিয়েছিল বাঁচার সম্ভাবনা নেই। তবুও বাড়ির লোকেদের সান্ত্বনা দিতে আশঙ্কার কথাটা বলতে পারিনি। ফোনে প্রতিদিন আশার কথাই শুনেছি। সেইজন্য মৃত্যুর খবর আর দিতে পারিনি। অন্যজনকে দিয়ে খারাপ খবরটা দিতে হয়েছে।’

প্রতিবেশী আজাদ শেখ, রহিম শেখরা বলেন, ‘ওরাই ছিল পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। এবার কি করে যে ওদের সংসার চলবে কে জানে!’

এদিন মৃত দুই পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়িতে যান জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ এবং নানুরের বিয়ায়ক বিধানচন্দ্র মাঝি। কাজল শেখ বলেন, “মৃত দু’জনের মধ্যে একজনের পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে নাম নথিভুক্ত রয়েছে। তাঁর পরিবার মৃত পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য রাজ্য সরকার বরাদ্দ সমস্ত সুযোগ সুবিধা পাবেন। আমরা সর্বতোভাবে অন্যজনের পরিবারের পাশে আছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *