রাজেন রায়, কলকাতা, ১৪ ডিসেম্বর: রাজ্যপালের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ প্রশাসন থেকে আরম্ভ করে প্রশাসনিক কাজকর্মে সমস্ত জায়গাতেই কোথায় গাফিলতি রয়েছে তার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম নজর রাখেন জগদীপ ধনকর। রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন রাজনৈতিক কর্মীতে পরিণত হয়েছে, বারবারই এই অভিযোগ করেছেন তিনি। আর এবার তার হাতে এল মারাত্মক তথ্য-প্রমাণ। রবিবার সন্ধ্যায় তিনি একটি টুইটে রীতিমতো নামের তালিকাসহ দেখালেন, ১৯৮৫ সালের ব্যাচের ১৯ জন অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসারকে দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এই দায়িত্ব দেওয়া রাজনৈতিক স্বার্থে বলে দাবি রাজ্যপালের।
বিশেষত, ১৯৮৫ সালের ব্যাচের অবসরপ্রাপ্ত অফিসারদের এত বিশাল পরিমাণে দায়িত্ব দেওয়ায় রীতিমতো ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে আইপিএস মহলে। অনেকেই মনে করছেন, যোগ্য অফিসারদের বসিয়ে রেখে অবসরপ্রাপ্তদের দিয়ে সরকার চালানোয় ক্ষুব্ধ আইপিএস মহল থেকেই এই তথ্য পেয়েছেন রাজ্যপাল, যা আসলে এক ধরনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।
রাজ্যপালের দাবি, যোগ্য কর্মঠ অফিসারদের বসিয়ে রেখে অবসরপ্রাপ্তদের দিয়ে প্রশাসন চালানোর প্রবণতা গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক। বিশেষ স্বার্থ ছাড়া কিছুতেই এই ঘটনা ঘটতে পারে না। আর মুখ্যমন্ত্রী রাজনৈতিক স্বার্থেই এই ১৯ জন অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসারকে ব্যবহার করছেন। বিষয়টিকে গভীর উদ্বেগের বলে বর্ণনা করেছেন রাজ্যপাল।
১৯ জন অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসারকে পুনর্নিয়োগ করে কোন কোন দায়িত্বে আনা হয়েছে তার তালিকাও প্রকাশ করেছেন। এই তালিকায় নাম রয়েছে সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ, রিনা মিত্র, একে মালিওয়াল, শিবাজী ঘোষ, কে হরি রাজন, কে এল টামটা, অরুণ কুমার গুপ্ত, সুব্রত মিত্র, শিব শংকর দত্ত, অজয় কুমার ঘোষ, আর এন সরকার, দিলীপ আদক, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, সরোজ গজমের, সুজয় চন্দ, গৌতম গুপ্ত, ভৌমিক এবং বিপ্লব নাগ। এরা রাজ্য প্রশাসনের কোন কোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছেন তাও উল্লেখ করেছেন তিনি। রাজ্যপালের টুইটেই স্পষ্ট, এই রাজনৈতিক অস্ত্রকে ব্যবহার করে এবার নতুন আক্রমণে নামতে চলেছেন তিনি। আর তাতে স্বাভাবিকভাবে অস্বস্তি বাড়বে রাজ্য প্রশাসনের।