স্বরূপ দত্ত, আমাদের ভারত, উত্তর দিনাজপুর, ১৬ জুন: চোপড়ায় বাম-কংগ্রেসের ওপর হামলার ঘটনায় ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের শুক্রবার ইসলামপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। তার মধ্যে ৮
জনকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছে পুলিশ। তবে ধৃত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই দাবি করেছেন তারা নির্দোষ, কেউ আবার জানিয়েছে, তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তখন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দুপুরে পায়ে হেঁটেই মনোনয়ন জমা দিতে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া বিডিও অফিসে যাচ্ছিলেন কাঁঠালবাড়ি এলাকার সিপিএম এবং কংগ্রেসের প্রার্থী ও দলীয় নেতা কর্মীরা৷ সেই সময় তাদের ওপর তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা সশস্ত্র হামলা চালায় বলে অভিযোগ। চলে এলোপাথাড়ি গুলি৷ ঘটনায় বেশকয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়৷ তড়িঘড়ি তাদের উদ্ধার করে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ তারমধ্যে একজনের অবস্থা সঙ্কটজনক থাকায় তাকে স্থানান্তরিত করা হয় শিলিগুড়ির উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
পঞ্চায়েত নির্বাচন কেন্দ্র করে মনোনয়ন পর্বে এমন ভয়াবহ সন্ত্রাসে কার্যত কেঁপে ওঠে গোটা রাজ্য। শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগে সরব হয় বিরোধীরা৷ মনোনয়ন পর্বেই যদি এমন হাড়হিম করা সন্ত্রাসের মুখোমুখি হতে হয় বিরোধীদের তাহলে গণতন্ত্র কোথায় গেল তা নিয়ে ওঠে প্রশ্ন। এরপরেই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে করতে হবে বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট৷
অন্যদিকে গতকালের এই সন্ত্রাস ও গোলাগুলির ঘটনায় শুক্রবার সকাল থেকেই থমথমে চোপড়ার বিভিন্ন এলাকা৷ বিরোধীদের অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনকে গ্রেফতারি দেখাতে গিয়ে পুলিশ আসল অপরাধীদের না ধরে নিরীহ মানুষকে ধরে নিয়ে গেছে। ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসের কাছে তারা ভীত ও সন্ত্রস্ত্র৷ এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই মনোনয়ন পেশ করতে পারেনি বলে অভিযোগ৷ সিপিএমের দাবি, তাদের কেউই বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমা করতে পারেনি। শাসক দলের সন্ত্রাসের ভয়ে প্রাণ বাঁচাতে দলের প্রার্থী, নেতা ও কর্মীরা চা বাগানে আত্মগোপন করেছিল৷ অনেকের এখনও খোঁজ নেই৷ একই অভিযোগ কংগ্রেসেরও৷ বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, পুলিশ ঠুঁটো জগন্নাথ। পঞ্চায়েত বিরোধী শূন্য করতেই শাসক দলের দুষ্কৃতীদের দাপট৷ বোমা, গুলি নিয়ে হামলা চালানো হচ্ছে। মানুষ এর জবাব দেবে৷ পাশাপাশি নমিনেশন দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর দাবিও জানান বিরোধী দলগুলি।