মাধ্যমিকে ফলাফলে বাঁকুড়ার জয়জয়কার, মেধা তালিকায় প্রথম দশে রয়েছে ১৪ জন

আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১৫ জুলাই: ২০২০ মাধ্যমিকের ফল ঘোষণা হয়েছে বুধবার। আর এই ফলাফলে বাঁকুড়ার জয়জয়কার। মেধা তালিকায় প্রথম দশে রয়েছেন চৌদ্দ জন। রাজ্যে প্রথম দশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করল বাঁকুড়ার ওন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের সায়ন্তন গড়াই। তার প্রাপ্ত নম্বর-৬৯৩। সে ভবিষ্যতে একজন বৈজ্ঞানিক হয়ে মানব জাতির কল্যাণে কাজ করতে চায়। বিজ্ঞান বিভাগের জন্য বাবার কাছেই সে যাবতীয় পড়াশোনা করলেও বাকি সব বিষয়ের জন্য এক জন করে গৃহ শিক্ষক ছিল। সায়ন্তনের কাছে এই ফলাফল ‘অপ্রত্যাশিত’ জানিয়ে সে বলে এই সাফল্যে সব চেয়ে বেশি অবদান তার বাবা মায়ের। এমনকি শিক্ষক শিক্ষিকাদের অবদানকেও সে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। নিয়ম করে প্রতিদিন পরীক্ষার প্রস্তুতির পাশাপাশি গল্পের বই পড়তে ভালোবাসে বলেই সে জানিয়েছে।

৬৯০ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থান অধিকার করল কেন্দুয়াডিহি হাইস্কুলের সৌম্য পাঠক। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৯০। সৌম্য মেডিক্যাল সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা শেষ করে একজন দক্ষ আইএএস অফিসার হতে চায়। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ধরে পড়াশোনা করেই এই সাফল্য মিলেছে জানিয়ে সে তার সাফল্যের জন্য তার বাবা মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশী বলেই জানিয়েছে।

মাধ্যমিকে পঞ্চম ও সম্ভবতঃ রাজ্যে মেয়েদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করল বাঁকুড়ার বিক্রমপুর রাধাদামোদর হাই স্কুলের রশ্মিতা সিংহ মহাপাত্র। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮। রশ্মিতার এই সাফল্যে খুশির জোয়ার জঙ্গলমহলের ছোট্ট জনপদ বিক্রমপুরজুড়ে। দিনে পাঁচ থেকে ছ’ঘন্টা পড়াশোনা করেই এই সাফল্য এসেছে জানিয়ে সে জানায় ভবিষ্যতে জীব বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে চায়। একই সঙ্গে ইংরাজীতে দু’জন ছাড়া প্রতি বিষয়ে একজন করে গৃহশিক্ষক ছিল। তার সাফল্যের পিছনে বাবা, মা, দাদুভাই ও সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকার অবদান রয়েছে বলেই জানায় রশ্মিতা।

রাজ্যে অষ্টম ও সম্ভবত জেলায় মেয়েদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করল বাঁকুড়ার গড়রাইপুর গার্লস হাইস্কুলের অঙ্কিতা ঘোষ। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৫। বাড়ি রাইপুরেরই মৌলাশোল গ্রামে। বেশ কয়েকটি বিষয়ে আরো বেশী নাম্বার প্রত্যাশা করেছিল জানিয়ে সে বলে, রাজ্যে অষ্টম স্থান দখল করতে পেরে খুশি। খুশি অঙ্কিতার বাবা- মা-ও। বাবা ও মা দুজনের শিক্ষকতা করেন। সাফল্যের পিছনে অঙ্কিতার বাবা-মা এবং গৃহ শিক্ষকের অবদান রয়েছে বলে জানায়। অঙ্কিতার ভালো লাগার বিষয় গুলি হল অঙ্ক এবং পদার্থবিদ্যা। অঙ্কিতা পড়াশোনা কোনো বাঁধাধরা নিয়মে করেনি। সে গান শুনতে কার্টুন দেখতে এবং খেলাধূলা করতে ভালোবাসে। অঙ্কিতা ভবিষ্যতে চিকিৎসা বিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করার পর আইএএস হতে চায়। প্রশাসনিক কাজে দক্ষতার সঙ্গে সামলাবে এমনটাই আশা অঙ্কিতার।

দশম স্থান অধিকার করল বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর হাই স্কুলের অঙ্কিত পাত্র। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৩। শহরের গোপেশ্বর পল্লীর বাসিন্দা অঙ্কিতের বাবা দেবরঞ্জন পাত্র পিয়ারডোবা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। টিভিতে নামটা দেখে প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেনি। তাই অনেকবার দেখতে হয়েছে। পড়াশুনার ক্ষেত্রে সেভাবে ছকে বাঁধা সময় ছিল না। যখন মনে হয়েছে তখনই পড়াশোনা সে করেছে বলে জানায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *