বাংলায় করোনা আক্রান্ত ১২৫৯, সুস্থ ২১৮, মৃত ৬১: বিস্তারিত তথ্য পেশ রাজ্যের

রাজেন রায়, কলকাতা, ৪ মে: রাজ্য সম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ করছে না, এই নিয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের পাশাপাশি রাজ্যপালও বারবার বিঁধেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। আর সোমবার থেকেই যেন সম্পূর্ণ ভোলবদল রাজ্য সরকারের। নবান্নের প্রেস কনফারেন্সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত এবং মৃতের সম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশই নয়, সোমবার রাতে স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে তথ্যের বিস্তারণ দেখে অনেকেই স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছেন। ৩ পাতার বুলেটিনে রাজ্যের সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এবং করোনা যুদ্ধে তাদের কাজ তুলে ধরেছে স্বাস্থ্য দফতর।

সোমবার বিকেলে নবান্নে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা বলেন, এ দিন পর্যন্ত রাজ্যে নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১২৫৯ জন। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ৯০৮ জন। এখনও পর্যন্ত করোনামুক্ত হয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২১৮ জন। এরই পাশাপাশি বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যাও। সোমবার পর্যন্ত রাজ্যে নোভেল করেনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত বেড়ে ৬১ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত মৃত্যু হয়েছে আরও ১১ জনের।

বুলেটিনে জানানো হয়েছে, ৩ মে পর্যন্ত ১১৯৮ এবং ৪ মে ৬১ জন নতুন আক্রান্তের খবর পাওয়া গিয়েছে। এদিন রাজ্যে ২২০১ জনের করোনা টেস্ট করা হয়েছে। রাজ্যে ১৫ টি সরকারি হাসপাতাল এবং ৫২ টি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে। মোট ৮০৩৬ টি বেড এবং ৮৬০ টি আইসিইউ তৈরি রাখা হয়েছে। তাতে ১৩.০৩% রোগী ভর্তি রয়েছেন। আর রাজ্যে ২৭১ টি ভেন্টিলেটর রয়েছে। এছাড়া রাজ্যে ১৬টি ল্যাবরেটরি যার মধ্যে দুটি এ সপ্তাহে চালু হয়েছে এবং আরও দুটি ছাড়পত্রের অপেক্ষায় রয়েছে তাও ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও রাজ্য মাস্ক, গ্লাভস, স্যানিটাইজার, পিপিই কত চেয়েছিল, আর কত পেয়েছে, সে কথাও উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া জেলা ভিত্তিক কোন রাজ্যে কত আক্রান্ত সেকথাও বলা রয়েছে। কলকাতাতে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৫৯ জন, হাওড়া ২৪১, উত্তর ২৪ পরগনা ১৭৮, হুগলির ৪১, এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা ৩৩ জন করোনা পজিটিভ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। কোন ল্যাবে কত টেস্ট হয়েছে এবং রাজ্য সরকারি ও হোম কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে কতজন রয়েছেন, কতজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, এই তথ্যও দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার গ্রাফের মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মুখ্যসচিব এ দিন আরও জানিয়েছেন, প্রতি ১০ লক্ষে এ রাজ্যে পজিটিভ কেসের হার ১৩.৯৮%। প্রতি ১০ লক্ষে মৃত‍্যুর হার ১.৪৭%। প্রতি ১০ লক্ষে সুস্থতার হার ১৭.৩২%। এখনও পর্যন্ত মোট করোনা পরীক্ষা হয়েছে ২৫১১৬ জনের। ৪৮৬০ জন বর্তমানে সরকারি কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। ৫৭৫৫ জন রয়েছেন হোম কোয়ারেন্টাইনে।

কিন্তু এতদিন সম্পূর্ণ তথ্য আসছিল না কেন?
মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, রিপোর্টিং পদ্ধতিতে জটিলতার জেরে প্রথমে সমস্যা হচ্ছিল। সব জায়গা থেকে তথ্য আসছিল না। এখন সরকারি, বেসরকারি সব ল্যাব থেকে তথ্য আসা শুরু করেছে। এখন সেই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা গিয়েছে। ফলে এখন রোজ মোট আক্রান্তের সংখ্যা জানাতে পারা যাবে।

কেন্দ্রের দেওয়া তথ্যের সঙ্গে রাজ্যের দেওয়া করোনা আক্রান্তের তথ্যে ফারাক ছিল। এদিন এই বিষয়টিরও উল্লেখ করেন মুখ্যসচিব। তিনি বলেন, ‘রাজ্য সরকার এতদিন শুধুমাত্র অ্যাক্টিভ কেসই জানাচ্ছিল। বোঝার সমস্যার জেরেই মোট আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। এ বার থেকে আর সেটা হবে না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *