আমাদের ভারত, ২১ জুলাই: সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশে ধর্মান্তর চক্রের মূল অভিযুক্ত জামাল উদ্দিন ওরফে ছাঙ্গুর বাবা গ্রেফতার হয়েছে। আর্থিক সহায়তার আশ্বাস বা বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অথবা ভয় দেখিয়ে জোর করে ধর্মান্তরিত করা হতো। টার্গেট করা হতো অসহায় শ্রমিক, তথাকথিত সমাজে নিচু শ্রেণির এবং বিধবা মহিলাদের। এবার এই চক্রের ১০ জন সদস্যকে ৬ রাজ্য রাজ্য থেকে গ্রেপ্তার করেছে উত্তর প্রদেশ পুলিশ। আর সেই অভিযুক্তদের মধ্যে একজন ভুল স্বীকার করে আবার হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
যোগী আদিত্যনাথ সরকার অবৈধ ধর্মান্তর, মৌলবাদ প্রচার, লাভ জিহাদ বন্ধ করতে মিশন অস্মিতা অভিযান শুরু করেছে। গত মার্চ মাসে আগ্রায় একই পরিবারের দুই তরুণী নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে এই অপরাধ চক্রের খোঁজ মেলে। আগ্রা থেকে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হয়। এই অভিযানে উত্তর প্রদেশ পুলিশকে সহায়তা করে স্পেশাল টাস্কফোর্স এবং সন্ত্রাস বিরোধী স্কোয়ার্ড।
আগ্রার পুলিশ কমিশনার দীপক কুমার জানিয়েছেন, মহিলা সহ ধৃত ১০ জনের মধ্যে রাজস্থান থেকে তিনজন, উত্তরপ্রদেশে পশ্চিমবঙ্গ থেকে দু’জন এবং দিল্লি, উত্তরাখন্ড ও গোয়া থেকে একজন করে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই চক্রের সদস্যরা মূলত লাভ জিহাদের মাধ্যমে কম বয়সী মহিলাদের টার্গেট করে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা চালাতো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা থেকে এই গোষ্ঠীকে আর্থিক সহায়তা করা হতো বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
দীপক কুমার বলেন, অবৈধভাবে ধর্মান্তর ও মৌলবাদের সঙ্গে জড়িত এই চক্রের কার্যপদ্ধতির সঙ্গে আইসিএস- এর মিল রয়েছে। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা থেকে এদের অর্থ সাহায্য করার সূত্র পেয়েছি। ধৃতরা মূলত অবৈধ তহবিল গ্রহণ, আশ্রয় প্রদান, আইনি পরামর্শ প্রদান, ধর্মান্তর মৌলবাদী প্রক্রিয়ায় সহায়ত করার মতো নেটওয়ার্কের বিভিন্ন ভূমিকা পালন করতো।
এই অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে রাজস্থানের বাসিন্দা মহম্মদ আলী। ধর্মান্তরিত হওয়ার আগে তার নাম ছিল পীযূষ পানোয়ার। তিনি পুলিশকে ধর্মান্তরিত করা নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তিনি ইসলাম ত্যাগ করে হিন্দু হতে চান।
তিনি জানান, ২০২১ সালে তার প্রথম দেখা হয় রাজস্থানের টঙ্কের মহিলা সানার সঙ্গে। সূত্রের খবর, প্রথম সাক্ষাতের পরেই তারা একে অপরের প্রেমে পড়ে যান। বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন, কিন্তু সানা শর্ত দিয়েছিল যে পীযূষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলে তবেই তিনি বিয়ে করবেন। শেষ পর্যন্ত সানার শর্তে রাজী হয় পীযুষ, ও পরে নিজের নাম পরিবর্তন করে মহম্মদ আলী রাখেন। পীযুষ কিন্তু ধর্মান্তরিত হওয়ার পর সানা তাকে প্রত্যাখ্যান করে এবং আলী উত্তর প্রদেশের বড়েলীর এক মুসলিম তরুণীকে বিয়ে করে।
ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সময় আলী নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত এক সদস্য মহম্মদ গাউসের সংস্পর্শে আসেন। গাউসের মাধ্যমে আলী দিল্লিতে ধর্ম গুরু কলিম সিদ্দিকীর সঙ্গে দেখা করেন। গত বছর কলিম একটি পৃথক ধর্মান্তর মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এরপর আলী ধর্মীয় শিক্ষার জন্য পশ্চিমবঙ্গে যান। তিনি আসানসোল, বর্ধমান, কাটোয়া পাড়ার মাদ্রাসা গুলিতে তিন মাস ছিলেন। এক বছর আগে ইনস্টাগ্রামে গোয়ার আয়েশা নামে এক মহিলার সংস্পর্শে আসেন তিনি। উত্তর প্রদেশ পুলিশ যে দশ জনকে গ্রেফতার করেছে তাদের মধ্যে আয়েশা ছিল।